সংবাদদাতা, ঘাটাল: সারা রাত বিছানার মধ্যেই ছিল জোড়া কেউটে! বছর আটের ছেলেকে নিয়ে তাতেই শুয়েছিলেন চন্দ্রকোণার আগর গ্রামের এক দম্পতি। সকালে বিছানা রোদে দিতে গিয়েই ভজহরি মালিক ও সুচিত্রা মালিক নামে ওই দম্পতির হার্টফেল করার জোগাড়! চাদর টানতেই প্রকাণ্ড দু’টি সাপ দেখতে পান তাঁরা। কোনও রকমে ঘর থেকে পালিয়ে তাঁরা নিজেদের রক্ষা করেন। সঙ্গে সঙ্গে ফোন করা হয় বনদপ্তরে।
ঘাটাল মহকুমা সোশ্যাল ফরেস্ট্রির বন্যপ্রাণী উদ্ধারকারী দলের সদস্য মলয় ঘোষ বলেন, আমি গিয়ে অনেকক্ষণ চেষ্টার পর সাপ দু’টিকে উদ্ধার করেছি। সাপ দু’টির স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর সেগুলি জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে।
ভজহরিবাবু দিনমজুর। মাঠের ধারে মাটির বাড়িতে থাকেন। চারদিন ধরে টানা বৃষ্টির প্রভাবে বিছানা, বালিশ সবই স্যাঁতসেঁতে হয়ে গিয়েছিল। রাতে শুয়ে স্বস্তি হচ্ছিল না। মঙ্গলবার সকালে রোদ উঠলে ওই দম্পতি ঠিক করেন, বিছানার সব কিছু রোদে দেবেন।
সুচিত্রাদেবী বলেন, বিছানার চাদরটা টানতেই একটা বিরাট কেউটে দেখতে পাই। সেটাকে দেখে ঘাবড়ে যাই। তারপরই দেখি, বিছানার গদির মধ্যে থেকে আরও একটি সাপ উঁকি দিচ্ছে। ভজহরিবাবু বলেন, কোনওরকমে স্ত্রীকে হাত ধরে টেনে বাইরে বেরিয়ে চিৎকার শুরু করে দিই। পড়শিরা জড়ো হন। তাঁরাই বনদপ্তরে খবর দেন।
ওই দম্পতি ভাবতেই পারছেন না, বছর আটেকের ছেলেকে নিয়ে দু’টি কেউটের সঙ্গে একই বিছানায় সারারাত কাটিয়েছেন। ভজহরিবাবু বলেন, ‘একেই বলে রাখে হরি মারে কে? ভগবান আমাদের পাশে ছিলেন বলেই আমরা রক্ষা পেলাম।’
মলয়বাবু বলেন, টানা বৃষ্টিতে চারদিকে জল। সাপ দু’টি থাকার জায়গা না পেয়ে ওই দম্পতির ঘরে ঢুকে পড়েছিল। গদির একটি ফুটো দিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়েছিল। রাতে কোনওভাবে সাপের গায়ে হাত-পা লেগে গেলে বড় অঘটন ঘটতে পারত। বর্ষায় বাড়ির দরজা-জানালার পাশে ব্লিচিং পাউডার বা কার্বলিক অ্যাসিড দেওয়াটা খুব জরুরি।-ফাইল চিত্র