সরঞ্জাম ভাড়ার নামেও টাকা সরাতেন সন্দীপ! তদন্তে নয়া তথ্য সিবিআইয়ের হাতে
প্রতিদিন | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
অর্ণব আইচ: আর জি করে ডাক্তারি পড়ুয়াদের কাউন্সেলিংয়ের জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম ভাড়া করার নামে সরানো হত বিপুল টাকা! আর জি কর হাসপাতালের দুর্নীতির তদন্তে সিবিআইয়ের হাতে উঠে এসেছে এই তথ্য। এই দুর্নীতিতে আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ সিবিআইয়ের। এই ব্যাপারে সন্দীপ তাঁর ঘনিষ্ঠদের কীভাবে কাজে লাগাতেন, তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। একই সঙ্গে কাদের থেকে কাউন্সেলিংয়ের জন্য সরঞ্জামগুলি ভাড়া করা হত, তাও জানার চেষ্টা করছে সিবিআই
সিবিআইয়ের কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে এমবিবিএস কোর্সের ছাত্রছাত্রীদের জন্য কাউন্সেলিং হয়। তার জন্য বেশ কিছু জিনিস আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া নেয়। এর মধ্যে ছিল একাধিক সিসিটিভি, কম্পিউটার, ওয়াইফাই, সাউন্ড সিস্টেম, প্রোজেক্টর, টেবিল, চেয়ার। এছাড়াও বাজেটের মধ্যে ছিল কাউন্সেলিংয়ের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের খাবার ও টিফিনের খরচ।
সন্দীপ ঘোষের অনুমতি নিয়েই এই জিনিসগুলি ভাড়া নেওয়া হবে বলে তালিকা তৈরি করা হয়। এর জন্য ১৪ লাখ টাকা খরচ দেখানো হয় বলে সিবিআই জানতে পেরেছে। অথচ সূত্রের মারফৎ সিবিআইয়ের কাছে খবর, এই সরঞ্জামগুলি অনায়াসেই কিনতে পারত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অথচ সেগুলি না কিনে আধিকারিকরা ভাড়া নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এর ফলে যতবার কাউন্সেলিং হত, ততবারই এই টাকা দিয়ে সরঞ্জাম ভাড়া নিতে হত আর জি করের কর্তাদের। ভাড়া নেওয়া সরঞ্জামগুলি বিভিন্ন জায়গা থেকে নিয়ে আসা ও ফেরত পাঠানোর জন্য দুবার করে গাড়িভাড়া বাবদও বিপুল টাকা আলাদাভাবে বাজেটে রাখা হয়। এর ফলে প্রত্যেকবারই বিপুল পরিমাণ টাকা হাসপাতালের তহবিল থেকে যেত বিভিন্ন জায়গায়। সিবিআইয়ের অভিযোগ, এই টাকার পরিমাণের একটি অংশ কমিশন হিসাবে নিতেন সন্দীপ ঘোষ ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা।
গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে, পেন ড্রাইভের ব্যাকআপের জন্য হাসপাতাল খরচ করত চার হাজার টাকা থেকে বারো হাজার টাকা পর্যন্ত। ওয়াইফাই ও হাই স্পিড ইন্টারনেটের জন্য খরচ করা হয় ১৮ হাজার টাকা। এছাড়াও কম্পিউটারের প্রিন্টারের কালি বা টোনারের জন্য আর জি কর কর্তৃপক্ষ খরচ করে ৪৫ হাজার টাকা। আবার সিবিআই জানতে পেরেছে যে, কাউন্সেলিংয়ের জন্য জায়েন্ট স্ক্রিন সিবিআই ভাড়া নেয়। অথচ দুসপ্তাহের মধ্যে দুবার আলাদা দরে জায়েন্ট ক্রিন ভাড়া নেওয়া হয়।
সিবিআইয়ের দাবি, এমবিবিএস ও স্নাতকোত্তর স্তরে বিভিন্ন সময় কাউন্সেলিংয়ের আয়োজন করা হত। ততবারই এই জিনিসপত্রগুলি সন্দীপ ঘোষের মদতে ভাড়া নিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই পদ্ধতিতে সন্দীপ ঘোষ ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা বিপুল টাকা হস্তগত করেন বলে জানিয়েছে সিবিআই।