তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনে আদালত থেকে বেকসুর খালাস পেলেন কৃষ্ণনগরের বিধায়ক মুকুল রায় এবং রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। বিধাননগরের বিশেষ আদালতের বিচারক বুধবার তাদের বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেন। মামলা দায়ের হওয়ার পর দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে শুনানি চলে বিধাননগরের ময়ূখ ভবনের বিশেষ আদালতে। মামলায় ৫২ জন সাক্ষ্য দেন।২০১৯-এর ৯ ফেব্রুয়ারি, সরস্বতী পুজোর আগের রাতে নদিয়া জেলার হাঁসখালিতে নিজের বাড়ির কাছেই গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন সত্যজিৎ। মাজিদপুর দক্ষিণপাড়ার ফুলবাড়ি ফুটবল মাঠে ‘আমরা সবাই’ ক্লাবের সরস্বতী পুজো উদ্বোধনের পর মঞ্চের সামনে চেয়ারে বসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখছিলেন তিনি। সেই সময়ে খুব কাছ থেকে মাথায় গুলি করে তাঁকে খুন করা হয়। ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক যোগও উঠে আসে। তারপর জল অনেক দূর গড়ায়।
পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও পরে মামলার তদন্তভার নেয় সিআইডি। ওই বছরই ৮ মে আদালতে চার্জশিট জমা হয়। তাতে ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। তিন জনেই ধরা পড়ে। পরে অতিরিক্ত চার্জশিট দিয়ে সিআইডি কৃষ্ণনগরের বিধায়ক মুকুল রায় এবং রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকারের নাম যোগ করে। সেই মামলারই শুনানি চলছিল বেশ কয়েক বছর ধরে।
এ দিন মুকুল ও জগন্নাথের বেকসুর খালাসের খবর পাওয়ার পর সত্যজিতের মা অঞ্জনা বিশ্বাস এবং ভাই সুজিত বিশ্বাস রাজ্য সরকারের ভূমিকায় খানিক অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা জানান, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কথা দিয়ে ছিলেন দোষীদের শাস্তি হবে। কিন্তু দুই অভিযুক্ত বেকুসুর খালাস পেয়ে গেল। সাক্ষ্যগ্রহণ ঠিক মতো হয়নি অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা।
জগন্নাথ সরকার এই সময় অনলাইন-কে বলেছেন, ‘তৃণমূলের প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির কারণেই আমার নাম যুক্ত করা হয়েছিল। সেটা প্রমাণ হয়ে গেল। আমি আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলছি, বিগত পাঁচ বছর ধরে সিআইডি বিভিন্নভাবে তদন্তের নামে আমাকে নাজেহাল করেছিল। আমি আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’ কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল জেলা সভাপতি রুকবানুর রহমান বলেন, ‘কোর্টের রায় আমরা মাথা পেতে নিচ্ছি। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা ঠিক নয়।’