• সঞ্জয়ের জামা-কাপড় বাজেয়াপ্ত গ্রেফতারের দু'দিন পর? পুলিশের 'গাফিলতি' নিয়ে বিস্ফোরক CBI
    আজ তক | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • আর জি করে তরুণী খুন-ধর্ষণের ঘটনায় বড়সড় তথ্য ফাঁস করল সিবিআই। তারা জানায়, মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের জামাকাপড় ও জিনিসপত্র গ্রেফতারের দু'দিন পর উদ্ধার করেছে কলকাতা পুলিশ। মূল অভিযুক্ত জেনেও এই বিলম্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে পুলিশের ভূমিকায়। যেখানে অভিযুক্তের জামাকাপড় সহ ব্যবহৃত জিনিসগুলি অপরাধে বড় ভূমিকা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হতে পারে।

    ঘটনার একদিন পর ১০ অগাস্ট সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। ঘটনার দিন ভোর ৪.০৩ মিনিটে তাকে হাসপাতালের সেমিনার হলে প্রবেশ করতে দেখা যায়। এক সিবিআই অফিসার বলেছেন, "অপরাধে অভিযুক্তের ভূমিকা ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে, কিন্তু পুলিশ তার জামাকাপড় এবং জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করতে দু'দিনের দেরি করেছে।"

    কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরে, ১৪ অগাস্ট এই মামলার তদন্তভার নেয় সিবিআই। এর আগে কলকাতা পুলিশ তদন্ত করছিল। এই ঘটনায় প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার ইনচার্জ অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। দু'জনের বিরুদ্ধেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রমাণ নষ্ট করার এবং তদন্তকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সিবিআই তদন্তেও সহযোগিতা করছেন না দু'জনেই।

    একজন কর্মকর্তা বলেন, মূল অভিযুক্ত এবং সহ-অভিযুক্তদের মধ্যে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের সম্ভাবনা রয়েছে। উভয় অভিযুক্তকে টালা থানার সিসিটিভি ফুটেজ, ক্রাইম সিন এবং মেডিকেল কলেজের মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাদের ফোন থেকে প্রাপ্ত মোবাইল ডেটাও পরীক্ষা করা হবে, যাতে তাদের মধ্যে কথোপকথন থেকে এ ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ষড়যন্ত্র শনাক্ত করা যায়।

    মঙ্গলবার, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ চিকিৎসক সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার ইনচার্জ অভিজিৎ মণ্ডলের সিবিআই হেফাজত তিন দিনের জন্য বাড়ানো হয়েছে। সিবিআই আদালতকে বলেছে দু'জনেই জিজ্ঞাসাবাদের সময় কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করছিল না, তাই তাদের হেফাজত বাড়ানো দরকার ছিল। তদন্তকারী সংস্থা আরও জানিয়েছে, মহিলা ডাক্তারের সঙ্গে গণধর্ষণের কোনও প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি।

    সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেছেন, এখনও ধর্ষণ বা হত্যার সঙ্গে সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডলের সরাসরি জড়িত থাকার কোনও প্রমাণ খুঁজে পাননি। তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের দিন গ্রেফতার হওয়া দু'জন বেশ কয়েকবার কথা বলেছিল বলেও জানা গেছে। তাদের দু'জনের কল ডিটেইলস থেকে সিবিআই জানতে পেরেছে তারা সেদিন নির্দিষ্ট নম্বরে অনেকগুলি কল করেছিল।

    এর পরে, আদালত সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডলের সিবিআই রিমান্ডের মেয়াদ ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন দিন বাড়িয়েছে। সিবিআই জানায়, টালা থানার ইনচার্জ অভিজিৎ মণ্ডলকে তথ্য প্রমাণ লোপাট, এফআইআর দায়েরে দেরি করা এবং অন্যান্য অভিযোগের কারণে গ্রেফতার করেন। সিবিআই আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদে সন্তোষজনক উত্তর না দেওয়ায় পুলিশ অফিসারকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল।

    হাসপাতালে আর্থিক অনিয়মের একটি মামলায় ২ সেপ্টেম্বর সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়। সিবিআই আইনজীবী বলেন, "আমরা মনে করি এই অপরাধের পিছনে বড় ষড়যন্ত্র রয়েছে।" টালা থানার পুলিশ সকাল ১০টায় এই ঘটনার খবর পেলেও পুলিশ আধিকারিকরা সকাল ১১টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে। রাত সাড়ে ১১টার পর এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়। ওই দিন থানার ওসি সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছেন।

    ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের আইনজীবী আদালতে বলেছিলেন, "আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে ধারাগুলি জামিনযোগ্য।" ঘটনাস্থলে দেরিতে এফআইআর দায়েরের মতো অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ জন্য তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হতে পারে, তবে এই ভুলের জন্য তাকে গ্রেফতার করা যাবে না। নোটিশ দেওয়ার পর যখনই সিবিআই তাঁকে ডেকেছে, তিনি সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন।
  • Link to this news (আজ তক)