বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনে বেকসুর খালাস ৩, আদালতের নির্দেশে হতাশ নিহতের স্ত্রী
প্রতিদিন | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: বিধায়ক সত্যজিৎ খুনে অভিযুক্তের কয়েকজন বেকসুর খালাস পেয়েছে। সেই খবর জানতে পেরে বাকরুদ্ধ সত্যজিৎ বিশ্বাসের স্ত্রী রূপালী বিশ্বাস। তাঁর দাবি, “খুনের বদলা ফাঁসি, আদালত যদি এই রায় দিত তাহলে অভিযুক্তদের পরিবারের লোকজন বুঝতেন স্বজনহারার বেদনা কাকে বলে।” বুধবার আদালতের রায়ের পর নদিয়ার তেহট্ট থানার হরিপুরে বাপের বাড়িতে বসে ‘সংবাদ প্রতিদিন’কে একথা জানান।
তিনি আরও বলেন, “দল ও আইন ব্যবস্থার প্রতি আমার সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আশা করি আমার স্বামীর খুনিরা উপযুক্ত শাস্তি পাবে।” কিছুটা চুপ করে থেকে রূপালী দেবী আরও বলেন, “আমার স্বামী তো কোন দোষ করেনি। ও পরোপকারী। মানুষের সমস্যা নিয়ে সারাদিন পড়ে থাকত। এলাকার মানুষও আমার স্বামীকে ভরসা করত। তবে কেন কাছের মানুষগুলো আমার স্বামীর সাথে এমনটি করল। তাদের তো সবসময় আমাদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল। তারাই বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে আমাদের ঠিক বাড়ির পাশের স্কুল মাঠে সরস্বতী পুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমার স্বামীকে নৃশংসভাবে গুলি করে খুন করল। আমার কোলের ছোট্ট ছেলেটি জানতেও পারল না তার বাবা আর বেঁচে নেই। মুখে কথা ফোটার আগেই পিতৃহারা হল।”
এই হত্যাকাণ্ডে তিন অভিযুক্ত বেকসুর খালাস পেয়েছে। দুজনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। বৃহস্পতিবার সাজা ঘোষণা। নিহত বিধায়কের স্ত্রী বলেন, “আইনের উপর আস্থা রাখছি। ওদের যেন ফাঁসি হয়। তাহলে আমার স্বামীর আত্মা শান্তি পাবে। আর যদি যাবজ্জীবন জেল খেটে বাড়ি ফিরে জনসমাজে ঘুরে বেড়ায় সেটা আমার পক্ষে খুব কষ্টের হবে। সর্বোপরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের উপর আমার সম্পূর্ণ আস্থা আছে, প্রথম দিন থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার সাথে আছেন,আমিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একজন সৈনিক হিসেবে পাশে আছি। থাকব।”
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি সরস্বতী পুজোর উদ্বোধনের রাতে নদিয়ার হাঁসখালিতে নিজের বাড়ির কাছে স্কুল মাঠে খুন হন কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস। ইতিমধ্যেই সুজিত মণ্ডল, অভিজিৎ পুণ্ডরি নামে দুই অভিযুক্ত জেলবন্দি। তৃণমূল বিধায়কের খুনের ঘটনায় তৎকালীন বিজেপি নেতা মুকুল রায়, রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার, সুজিত মণ্ডল ও অভিজিৎ পুণ্ডরি, নির্মল ঘোষ-সহ একাধিক নাম উঠে আসে। ইতিমধ্যেই সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের ঘটনার সাক্ষ্যদান পর্ব শেষ। বুধবার জগন্নাথ সরকার, নির্মল ঘোষ ও মুকুল রায়কে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেয় আদালত। বাকি দুজন সুজিত মণ্ডল এবং অভিজিৎ পুণ্ডরিকে দোষী সাব্যস্ত করে বিধাননগর এমপি এমএলএ আদালত। বৃহস্পতিবার তাদের সাজা ঘোষণা। আদালতের রায়ের দিকে তাকিয়ে নদিয়ার মানুষ।