• কাটোয়ায় জলবন্দি শুনিয়া গ্রাম, ভোগান্তি
    বর্তমান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: কাটোয়ার কোশিগ্রাম পঞ্চায়েতের শুনিয়া গ্রামকে চারদিক থেকে ঘিরেছে অজয়। তিনদিন ধরে বৃষ্টিতে অজয়ের জলস্তর অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। ফলে গ্রামের চারপাশে জল থইথই করছে। গ্রামে ঢোকা বা বেরোনোর রাস্তা আর নেই। ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এই গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের সীমা থাকছে না। তাঁরা নৌকার ব্যবস্থা করার দাবি তুলেছেন।


    কাটোয়ার মহকুমা শাসক অর্চনা পনধরিনাথ ওয়াঙখেড়ে বলেন, ওই গ্রামে আমরা নজরদারি চালাচ্ছি। নৌকার ব্যবস্থা হয়েছে। বিডিওকেও নজর রাখতে বলেছি।


    কাটোয়া-১ ব্লকের কোশিগ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে থাকা এই গ্রামে এখন সাকুল্যে ৮০টি পরিবারের বাস। গ্রামে কোনও স্কুল নেই। ভোট দিতে যেতে হয় ৪ কিমি দূরে পাশের গ্রামে। গ্রামে ঢোকার মূল পথ হল অজয়ের ধারে একটি সরু ঢালাই রাস্তা। অজগর সাপের মত অজয় নদ চারদিক দিয়ে গ্রামটিকে পেঁচিয়ে ধরেছে। বুধবার জলস্তর বেড়েছে। গ্রামে ঢোকা বা বেরনোর আর কোনও উপায় নেই।


    গ্রামের বাসিন্দা অভিজিৎ হাজরা বলেন, আমাদের দুর্ভোগের সীমা নেই। কোনও নৌকার ব্যবস্থা নেই। কেউ রাতে অসুস্থ হলে তাঁকে জল পেরিয়ে কীভাবে হাসপাতালে নিয়ে যাব? অপর বাসিন্দা রাধেশ্যাম হাজরা বলেন, আমরা গ্রামের বাইরে কীভাবে যাব? রাস্তায় এক বুক জল। প্রচুর স্রোত। তিনদিন ধরে জলবন্দি আছি। কেউ কোনও খোঁজ নিচ্ছে না। গ্রামে বেশ কয়েকটি বাড়িতেও জল ঢুকেছে। কাটোয়া শহর থেকে পালিটা রোড ধরে কাশীরাম দাস সেতু যাওয়ার রাস্তায় যেতে হবে। তারপর সুড্ডো গ্রামকে বাঁদিকে ফেলে অজয়ের ধারে তিন কিমি এগোলেই শুনিয়া গ্রাম। গ্রামের অনেকের আক্ষেপ, বেশি বৃষ্টি হলেই পুরো গ্রাম জলবন্দি হয়ে পড়ে। তাই এই গ্রামে কেউ ছেলেমেয়ের বিয়ে দিতে চান না। তখন অনেক অনুরোধ করতে হয়। তাছাড়া, গ্রামে কোনও অনুষ্ঠানের জন্য বড় ঝক্কি পোহাতে হয়। গোরু বা মোষের গাড়ি করে শহর থেকে ডেকোরেটরের মালপত্র আনতে হয়। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, বাইরে থেকে কোনও বন্ধুকে নিমন্ত্রণ করতে ভয় লাগে। তাঁরা অনেকেই গ্রামে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে আসতে পারেন না। আমরা পাশের যতীনপুর গ্রামে গিয়ে ভোট দিয়ে আসি। আর ছেলেমেয়েরা পাঁচ কিমি দূরে কোশিগ্রাম বা বিল্বেশ্বর স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা করে।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)