দেউচা পাচামির পর কি খয়রাশোল? কয়লা ব্লকের হদিশ পেল কেন্দ্রীয় সংস্থা
বর্তমান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: কোল ইন্ডিয়ার অধীন সেন্ট্রাল মাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ডিজাইন ইনস্টিটিউট (সিএমপিডিআই) বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের বিনোদপুর ভবানীগঞ্জ এলাকায় একটি বড় কয়লা ব্লকের সন্ধান পেয়েছে। যার নাম তামরা ব্লক। বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে বিপুল পরিমাণ কয়লা উত্তোলনের পরিকল্পনা ও নকশা তৈরির কাজও চলছে বলে জানা গিয়েছে সিএমপিডিআই সূত্রে। পশ্চিম বর্ধমান ঘেষা এই এলাকায় পরিকল্পনা করে কয়লা উত্তোলন করা হলে ফের কর্মসংস্থান ও রাজস্ব বৃদ্ধির সুযোগ আসতে চলেছে।
সিএমপিডিআই রিজিওন্যাল ১ এর রিজিওন্যাল ডাইরেক্টর ইরশাদ আহমেদ বলেন, পূর্ব ভারতে আমরা বাংলাকে ফোকাস করে কাজ করছি। পাঁচামির পর বিনোদপুর ভবানীগঞ্জেও নতুন কয়লা ব্লকের সন্ধান মিলেছে। এনিয়ে কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। প্রসঙ্গত, সিএমপিডিআইয়েই পাঁচামি কোল ব্লক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিল। যা এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ কয়লা প্রকল্প হতে চলেছে। সিএমপিডিআইয়ের কাজ, দেশের কোন এলাকায় কত কয়লা সঞ্চিত রয়েছে তা খুঁজে বের করা। কী পরিমাণ কয়লা রয়েছে, গুণমান কেমন, তা যাচাই করা এবং কয়লা উত্তোলনের পরিকল্পনা ও নকশা করা।
দেশজুড়ে সিএমপিডিআইয়ের যতগুলি রিজিওন্যাল ইনস্টিটিউট আছে তাদের কালচারাল মিট অনুষ্ঠিত হচ্ছে আসানসোলে। আসানসোলের রবীন্দ্রভবনে সেই অনুষ্ঠানেই হাজির হয়েছিলেন ইরশাদ আহমেদ। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করতে গিয়ে রাজ্যের শিল্প ও কয়লা ক্ষেত্রে নতুন আশার কথা জানান তিনি। শিল্প বাণিজ্যে বাংলা পিছিয়ে। রাজ্যে তৃণমূল সরকারের জন্য শিল্প বাণিজ্য বাংলায় আসছে না এই অভিযোগ সিপিএম, বিজেপি দুই শিবিরেরই। কিন্তু বার বার কেন্দ্রীয় সংস্থার রিপোর্টে তার উল্টো চিত্রই ধরা পড়ে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীনই কিন্তু পাঁচামি কয়লা খনি প্রকল্প শুরু হয়েছে। যা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার জোগান নিয়ে রাজ্যকে আর ভাবতে হবে না। অন্য রাজ্যের প্রতি নির্ভরও করতে হবে না। পাশাপাশি বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। তারপরই তামরা ব্লকের খবর বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমানের পাশাপাশি রাজ্যের জন্য সুখবর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খয়রাশোল ব্লকের পারশুন্ডি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে তামরা এলাকা। সেখানে বিভিন্ন সময়ে কয়লা চুরির অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু পরিকল্পিত ভাবে কয়লা উত্তোলন হয়নি। জানা গিয়েছে, একটি বেসরকারি সংস্থা কাঁকরতলা এলাকায় কয়লা প্রকল্প গড়ার জন্য জমি অধিগ্রহণে অগ্রসর হয়েছে। এরপর নতুন কয়লা ব্লক পাওয়া গেলে এলাকার চিত্রটাই পাল্টে যেতে পারে। অজয় পার হলেই পাণ্ডবেশ্বর ব্লক। পশ্চিম বর্ধমান জেলার মানুষেরও উপকৃত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। ইসিএল সূত্রেও জানা গিয়েছে, কয়লা প্রকল্প গড়ার ক্ষেত্রে রাজ্যের পরিবেশ পাশ্ববর্তী রাজ্যের তুলনায় অনেক ভালো। ইসিএলের এক কর্তার দাবি, আমরা এই দশকে সোনপুরবাজারি, নারায়নকুড়ি সহ নানা জায়গায় বড় বড় প্রকল্পের কাজ শুরু করেছি। কোনও সমস্যা হয়নি। উল্টোদিকে ঝাড়খণ্ডের রাজমহলে প্রকল্প চালু করতে চূড়ান্ত বেগ পেতে হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, দু’নম্বর জাতীয় সড়কের দু’পাশ ধরে ছোট ছোট ফ্যাক্টরি গড়ে উঠছে। বিভিন্ন শিল্পতালুকেও বিনিয়োগ আসছে। এলাকায় কয়লা উত্তোলন যত বাড়বে তত শিল্প গড়ে উঠবে। এক অনুষ্ঠানে সিএমপিডিআই রিজিওন্যাল ১ এর ডিরেক্টর ইরশাদ আহমেদ। নিজস্ব চিত্র