নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কাকে আড়াল করতে আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ সেমিনার হল থেকে তথ্যপ্রমাণ লোপাটে এতটা মরিয়া ছিলেন, তার উত্তর খুঁজছে সিবিআই। প্রাক্তন অধ্যক্ষ কারও ইশারায় এই কাজ করছিলেন কি না, সেটাও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। জেরা পর্বে তদন্তকারীদের সামনে সন্দীপের এই নীরবতা তাঁদের সামনে নতুন নতুন প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। তাহলে কাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন তদানীন্তন অধ্যক্ষ, সেটা জানতে হাসপাতালের একাধিক কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁর মোবাইলের কল ডিটেইলস পরীক্ষা করে এই জট খোলার চেষ্টা হচ্ছে।
আর জি করে তরুণী চিকিৎসক খুন ও ধর্ষণের তদন্তে এখন সিবিআই তথ্যপ্রমাণ লোপাটের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। সেটি না থাকায় তাদের ঘটনাক্রম মেলাতে গিয়ে একাধিক ফাঁক ধরা পড়ছে। শুধু সেমিনার হলে ডাক্তার সহ বহিরাগতদের ঢুকে পড়াই নয়,সেখানে পড়ে থাকা বিভিন্ন জিনিসপত্রের স্থান পরিবর্তন ঘটেছে। বেশকিছু সামগ্রী সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনটাই দাবি করছে এজেন্সি।
সিবিআইয়ের দাবি, সন্দীপ নিজের চেম্বারে বসে থেকে বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন। প্রাক্তন অধ্যক্ষ জেরায় তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, আর জি করে তদন্তে যাওয়া টালা থানার টিমকে তিনি নিয়ন্ত্রণ করছিলেন। স্থানীয় থানার অফিসাররা তাঁকে চিনতেন। যে কারণে তাঁর নির্দেশ কেউ উপেক্ষা করতে পারেননি। উল্টে অফিসাররাই তাঁর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। হাসপাতালের সমস্ত বিষয় প্রাক্তন অধ্যক্ষের নখদর্পণে থাকায় পুলিসও তাঁর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। তদন্তকারীরা জেনেছেন, ঘটনার দিন তিনি চেম্বারে বৈঠক করেন পুলিসের এক আধিকারিকের সঙ্গে। সন্দীপের মূল লক্ষ্য ছিল, যে কোনও উপায়ে সমস্ত ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়া। সিবিআইয়ের প্রশ্ন, তদন্তে যাওয়া পুলিস অফিসাররা আইন ও নির্দিষ্ট গাইডলাইন ভুলে গিয়ে কেন সন্দীপের উপর এতটা নির্ভরশীল হয়ে পড়লেন? এখান থেকেই তাঁর সঙ্গে পুলিসের আঁতাত বের করার চেষ্টা করছেন এজেন্সির অফিসাররা। পাশাপাশি যে ২৭ মিনিটের ফুটেজ দেওয়া হয়েছে, তাতে আসল জিনিস নেই বলে দাবি সিবিআইয়ের। তদন্তকারীদের অভিযোগ, তথ্যপ্রমাণ লোপাট করতে ফুটেজ উড়িয়ে দিয়েছেন সন্দীপ। ঘটনার দিন খবর পাওয়ার পর ওসি কখন থানায় এসেছিলেন, সেখানে আর কারা এসেছিলেন, জানতে থানার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নেওয়া হয়েছে। তা ফরেন্সিক পরীক্ষা করিয়ে তদন্তকারীরা দেখবেন সেখান থেকে কোনও ছবি মুছে দেওয়া হয়েছে কি না।