• ডাক্তারদের অবস্থান মঞ্চ হারাচ্ছে সাধারণের উপস্থিতি, ফাঁকা ছাউনি থেকে পাতলা হচ্ছে স্লোগানের আওয়াজ
    বর্তমান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গত এক সপ্তাহ ধরে সল্টলেকের স্বাস্থ্যভবনের সামনে মানুষ দেখেছে ‘আন্দোলনের কার্নিভাল’। এলাহি আয়োজনে খাওয়া-দাওয়া থেকে বিছানা-ফ্যান কোনও কিছুরই অভাব নেই। বিকেল হতেই চিকিত্সকদের সঙ্গে স্লোগানের গলা মেলাতে সাধারণ মানুষও চলে আসতেন। কিন্তু বুধবার সন্ধ্যায় দেখা গেল উল্টো চিত্র। গত কয়েকদিনের তুলনায় অবস্থান মঞ্চ বেশ ফাঁকা। এমনকী আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সংখ্যাও কম। স্লোগানের আওয়াজও কমে এসেছে। এদিন যাঁরা এসেছিলেন তাঁরাও বলছেন, ‘আজ বড়ই ফাঁকা।’


    কেন এমন ফাঁকা? বেশিরভাগ লোক মনে করছেন, ‘দাবিদাওয়া তো সবটাই মেনে নেওয়া হয়েছে। আর কর্মবিরতি কেন থাকবে?’ শুধু যে অবস্থান মঞ্চ ফাঁকা হয়েছে এসেছে, এমনটা নয়, সাধারণের মিছিল-রাত দখলের স্রোতও অনেকখানি কমেছে। গোটা রাস্তা জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা থাকেন। এদিন সেই জায়গাগুলোতেও আন্দোলনকারীদের সংখ্যা কম দেখা গেল। ফলত, একটি প্রশ্নই এদিন অবস্থান মঞ্চে ঘুরপাক খেল। তা হল, তবে কি সাধারণ-মধ্যবিত্ত মানুষ আর পাশে থাকছেন না? এদিনও কিন্তু খাবার-দাবার নিয়ে কয়েকজনকে অবস্থান মঞ্চে আসতে দেখা গেল। মধ্যবিত্ত কোথায়? যাঁরা, একটা সময় দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করেছিলেন এই আন্দোলনরত চিকিত্সকদের। প্রতিদিন বিকেল হলেই রাস্তাজুড়ে চলা অবস্থান মঞ্চে তিল ধারনের জায়গা থাকে না। একেবারে সেজেগুজে সাধারণ মানুষরা চলে আসতেন আন্দোলন দেখতে। এদিন সেসব উধাও। স্লোগানের চিত্কারে পাশের লোকের কথাও শোনা যেত না। এদিন সন্ধ্যায় দেখা গেল, একটি-দু’টি গোষ্ঠী স্লোগান দিচ্ছেন। ৩০ জনের প্রতিনিধি দল যখন সাংবাদিক সম্মেলন করে নবান্ন গেলেন, তখনও স্লোগানের বহর নেই। থাকবেই বা কীভাবে? জনসমাগমই তো কম। মঙ্গলবারই এক ডাক্তার নেতাকে সাধারণের উদ্দেশে আহ্বান করতে শোনা গিয়েছিল, আপনারা আরও বেশি সংখ্যায় এসে যোগ দিন। ওই অবস্থান মঞ্চকে ঘিরেই বহু চা বিক্রেতা ব্যবসা করেন। এদিন সন্ধ্যায় তাঁরাই বলছিলেন, ‘এখানে আর বেশি সময় দেওয়া যাবে না। বিক্রি কমে আসছে।’ তাঁরাও বলছেন, ‘অন্যান্য দিনের চেয়ে এদিন বিক্রিও অনেক কম হয়েছে।’ এদিন সন্ধ্যায় ডাক্তারদের প্রতিনিধি দল নবান্নর উদ্দেশে রওনা দেওয়ার পর, ‘একদা জমজমাট’ অবস্থান মঞ্চ যেন আরওই ফাঁকা হয়ে গেল। 
  • Link to this news (বর্তমান)