• জেলা আইএমএ ‘দখলমুক্ত’ করতে ভোট চান প্রতিবাদীরা
    আনন্দবাজার | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • রাজ্য স্বাস্থ্য-শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য প্রশাসনে ‘প্রভাবশালী’ চিকিৎসক গোষ্ঠী ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র দখল থেকে আইএমএ-র (ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন) জলপাইগুড়ি শাখাকে ‘মুক্ত’ করতে এ বার নির্বাচনের ঘোষণা করতে চলেছেন ‘প্রতিবাদী’ চিকিৎসকেরা।

    গত ১১ সেপ্টেম্বর আইএমএ-র জলপাইগুড়ি শাখার সদস্যদের একাংশ বিশেষ বৈঠকে বসেন, যেটিকে তলবিসভা বলেও দাবি করা হয়েছে। বৈঠকে ছিলেন আইএমএ-র জলপাইগুড়ি শাখার সভাপতি নিতাই মুখোপাধ্যায়। বৈঠকে সর্বসম্মতিতে আইএমএ-র জলপাইগুড়ি শাখার সম্পাদক সুশান্ত রায়, সৌত্রিক রায় এবং অভীক দে-কে প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে সাসপেন্ড করার প্রস্তাব করে, কেন্দ্রীয় শাখার কাছে ঘোষণার জন্য পাঠানো হয়। সে ঘোষণা এখনও হয়নি। উল্টে, গত ১১ সেপ্টেম্বরের বৈঠকের আইনগত বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে প্রতিবাদী চিকিৎসকদের পরবর্তী পদক্ষেপ হল, যত দ্রুত সম্ভব আইএমএ-র জলপাইগুড়ি শাখার নির্বাচন ঘোষণা। নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গড়ে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আইএমএ-র জলপাইগুড়ি শাখার এক সদস্যের কথায়, “প্রথমে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। তার পরে, ভোট ঘোষণা করে কমিটি গঠন। আমাদের কাছে একশোরও বেশি সদস্যের সম্মতি রয়েছে। এর বেশি কিছু বলছি না।”

    আইএমএ-এর ডাকে গত রবিবারের মিছিলে ব্যাপক সাড়া দিয়েছিলেন সাধারণ নাগরিকেরা। প্রতিবাদী চিকিৎসকদের দাবি, জেলা শাখার সদস্য চিকিৎসকেরাও প্রচুর সংখ্যায় পথে নেমেছিলেন। সে মিছিলই ‘শক্তি’ জোগায় প্রতিবাদীদের। মিছিল শেষে মঞ্চ থেকে নাম করে ‘উত্তরবঙ্গ লবি’ ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা করা হয়। তারই পরবর্তী পদক্ষেপ নতুন নির্বাচনের ভাবনা। আইএমএ-র যে কোনও শাখায় দু’বছর অন্তর নির্বাচন হয়। জলপাইগুড়ি শাখার নির্বাচনের সময় এসেছে। আপাতত সিদ্ধান্ত হয়েছে, গত ১১ সেপ্টেম্বরের মতো ফের একটি বৈঠক ডেকে শতাধিক সদস্যের বেশি উপস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন গড়া হবে।

    সুশান্ত রায়, সৌত্রিক রায় এবং অভীক দে-কে প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে সাসপেন্ডের সুপারিশ থাকায়, তাঁরা কেউই ভোটে যোগ দিতে পারবেন না বলে দাবি ‘প্রতিবাদী’ চিকিৎসকেদের। যদিও সুশান্ত একাধিকবার দাবি করেন, আইএমএ-র ভোটের কারণেই রাজনীতি করে তাঁকে নানা অপবাদে জড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যে বৈঠকে সুশান্ত-সহ তিন জনকে সাসপেন্ডের সুপারিশের সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ১১ সেপ্টেরের বৈঠকের বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন সুশান্ত-পুত্র সৌত্রিক রায়। এমনকি, ‘প্রতিবাদী’ চিকিৎসকদের একাংশ দু’শোরও বেশি সদস্যদের শাখায় ২৯ জন উপস্থিত থেকে সিদ্ধান্ত নিলে, তার বৈধতা কত দূর তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন।

    কেন্দ্রীয় আইএমএ-র তরফে সাড়া না মেলায় ‘অস্বস্তি’ থাকলে আশাবাদী ‘প্রতিবাদীরা’। আইএমএ-র জলপাইগুড়ি শাখার প্রাক্তন সম্পাদক পান্থ দাশগুপ্ত বলেন, “তদন্তের গতিপ্রকৃতি জানতে, আর দু-এক দিন অপেক্ষা করব। তার পরেই নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে নতুন কমিটি নির্বাচন হবে।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)