• রোগীদের জন্য বিশেষ মশারি ইএসআই হাসপাতালে
    আনন্দবাজার | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • কখনও সরঞ্জামের অভাবে। আবার কখনও শারীরিক অক্ষমতার কারণে শয্যায় মশারি টাঙাতে সমস্যায় পড়েন হাসপাতালের চিকিৎসাধীন রোগীরা। ফলে মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় তাঁদের। তাই একটি বিশেষ ধরনের ওষুধযুক্ত মশারি ব্যবহারে উদ্যোগী হয়েছেন আসানসোল ইএসআই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আগামী সপ্তাহেই এই বিশেষ মশারি রোগীদের দেওয়া হবে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। রাজ্যের ইএসআই হাসপাতালগুলির মধ্যে আসানসোলেই এই উদ্যোগ প্রথম বলে কর্তৃপক্ষের দাবি।

    গত বারের তুলনায় কম হলেও, এ বারও ডেঙ্গির প্রকোপ রয়েছে আসানসোল শিল্পাঞ্চল জুড়ে। সেপ্টেম্বরের গোড়ায় এই শিল্পাঞ্চলে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৯০ জন। স্বাস্থ্য দফতর ও আসানসোল পুরসভার যৌথ প্রচেষ্টায় ডেঙ্গির মোকাবিলায় কিছুটা ফল মিলেছে। তবু রোগের প্রকোপের আশঙ্কা রয়েছেই। তাই হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের জন্য বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছেন ইএসআই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সুপার অতনু ভদ্র বলেন, ‘‘বিশেষ ওষুধ দেওয়া মশারি দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে রোগীদের। এই মশারি শয্যায় টাঙাতে হবে না। এক পাশে ঝুলিয়ে রাখলেই মশার কামড় থেকে রেহাই মিলবে। রোগীর আশপাশে মশা আসবে না। রাজ্যের ইএসআই হাসপাতালগুলির মধ্যে আসানসোলেই প্রথম এই উদ্যোগ হল।’’ তিনি জানান, হাসপাতালে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী নেই যে তাঁরা রোগীদের নিয়মিত সাহায্য করবেন মশারি টাঙাতে। কিন্তু এটি এমনই মশারি যে শয্যার যে কোনও প্রান্তে ঝুলিয়ে রাখলেই মশা কামড়াবে না।

    হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রাজ্য সরকাররে অনুদানপ্রাপ্ত ‘তন্তুজ কো-অপারেটিভ সোসাইটি’র কাছ থেকে এই মশারি কেনা হয়েছে। তাতে এক ধরনের রাসায়নিক যোগ করা রয়েছে। এই রাসায়নিক মানুষের শরীরের কোনও ক্ষতি করে না। কিন্তু মশা-সহ নানা পোকামাকড়কে দূরে রাখে। প্রতিটি মশারি পিছু খরচ পড়েছে প্রায় সাড়ে তিনশো টাকা। এই হাসপাতালে ১৩০টি শয্যা আছে। প্রত্যেক রোগী পিছু একটি করে মশারি থাকবে। একটি মশারি সর্বোচ্চ দশ বার ধোয়া যাবে। তার পরে এর কর্মক্ষমতা হ্রাস পাবে।

    ইএসআই হাসপাতালের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন জেলার সিএমওএইচ শেখ মহম্মদ ইউনুস। তিনি জানান, ডেঙ্গির উপদ্রব রুখতে স্বাস্থ্য দফতর কাজ করছে। পাশাপাশি, সকলেই যদি ডেঙ্গি প্রতিরোধক ব্যবস্থা নেন তবে এর প্রকোপ কমানো সম্ভব। তিনি বলেন, ‘‘এমন বিশেষ মশারি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হাসপাতালগুলিতে বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়ে মাস দুয়েক আগে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে আবেদন পাঠানো হয়েছে।’’ সিএমওএইচের দাবি, এখন আসানসোল শিল্পাঞ্চলে ডেঙ্গি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে এ বার ডেঙ্গির ‘স্পর্শকাতর অঞ্চল’ বলে নির্দিষ্ট কিছু ছিল না। ধারাবাহিক নিরীক্ষণ চালিয়ে দেখা গিয়েছে, ভিন্‌ রাজ্য থেকেও অনেকে ডেঙ্গি নিয়ে এই জেলায় এসেছেন।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)