সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা বানভাসি। বর্ষা বিদায় নিয়ে রোদ ঝলমলে আবহাওয়া হলেও জল নামার লক্ষ্ণণ নেই নদী তীরবর্তী এলাকাগুলি থেকে। মেদিনীপুর, হাওড়ার বহু জায়গা এখনও জলমগ্ন। তবে তা যত না বৃষ্টির জলে, তার চেয়ে বেশি ডিভিসির ছাড়া জলে। আর তা নিয়েই ফের ডিভিসিকে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের প্লাবন পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। উদয়নারায়ণপুরে জলে দাঁড়িয়েই বললেন, ”সবসময় অন্যদের জলে বাংলা ভাসে। উত্তরবঙ্গে বন্যা হয় ভুটানের জলে। মালদহে বিহারের জল ঢুকে প্লাবিত করে। আর ডিভিসির যখন তখন ছাড়া জলে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলো ভাসে। বার বার ওদের বলা সত্ত্বেও প্রতিবার এক কাজ করে।” ঝাড়খণ্ডে প্রবল বৃষ্টিতে ডিভিসির উপর চাপ বেড়েছে। তাই জল ছাড়া হয়েছে। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত, ”আগামী তিনদিন ঝাড়খণ্ড সীমানা সিল করা থাকবে। এটা ডিজি রাজীব কুমারকে বলব।”
ডিভিসির পাশাপাশি এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশেও আক্রমণ শানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ”কেন্দ্র তিন বছর ধরে টাকা দেয় না। আমরা তাই নিজেদের অর্থেই ১১ লক্ষ পাকা বাড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আরও একলক্ষ বাড়িয়ে দেব, ডিসেম্বরের মধ্যে তৈরি হবে। টাকা জোগাড় করতে আমাদের কষ্ট হয়। তবু এই কাজ তো করতে হবে। নাহলে প্রতিবার বন্যা রাজ্যের কাঁচা বাড়িগুলির ক্ষতি হয়। এখনও রাজ্যে ৫০ লক্ষ কাঁচা বাড়ি রয়েছে।”
এদিকে এই মুহূর্তে পূর্ণিমার ভরা কোটাল নদীগুলি প্লাবিত। তাতেও জলমগ্ন হয়ে পড়ছে একাধিক এলাকা। সে ব্যাপারে সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ”এই জল নামতে তিন, চারদিন লাগবে। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে চাষের জমিগুলির। তবে শস্য বিমা রয়েছে সরকারের তরফে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সেসব টাকা দেওয়া হবে কৃষকদের।” জল যতদিন না নামে, ত্রাণশিবিরগুলিতে পর্যাপ্ত খাদ্য, বস্ত্র মজুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এর আগে পাঁশকুড়ার বন্যা পরিস্থিতি দেখে তিনি ডিভিসি-র সঙ্গে সম্পর্ক ছেদের কথা বলেছেন। উদয়নারায়ণপুরেও একই কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, ডিভিসি সবসময়ে আমাদের বিপদে ফেলবে, আর আমরা সম্পর্ক রাখব নাকি? আমি ওদের বলেছি, যখন ৮০ শতাংশ জল ভরে যায়, তখন আপনারা একটু একটু ছাডুন, তাহলে আমাদের অসুবিধা হয় না। কিন্তু ওরা তা করবে না। তাছাড়া বিভিন্ন নদীগুলিতে ড্রেজিং হয় না অনেকদিন। তাই এই অবস্থা।”