গোবিন্দ রায়: অডিও ক্লিপ ভাইরাল কাণ্ডে বাম যুব নেতা কলতান দাশগুপ্তর জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার এনিয়ে দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের পর রায়দান স্থগিত রাখা হয়েছিল। তবে সন্ধের দিকে বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ তাঁকে ৫০০ টাকা ব্যক্তিগত বন্ডের বিনিময়ে জামিন দেন। গত ৫ দিন তিনি পুলিশ হেফাজতে ছিলেন। স্বভাবতই খুশি বাম নেতৃত্ব। এদিন সওয়াল-জবাবে কলতানকে কৃষ্ণের সঙ্গে তুলনা করেন রাজ্যের আইনজীবী। অডিও ভাইরালের ঘটনায় ধৃত আরেক ব্যক্তি সঞ্জীব দাসকে তুলনা করেন অর্জুনের সঙ্গে। তা নিয়ে কলতানের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় আদালতে।
বৃহস্পতিবার শুনানির শুরুতে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য সওয়াল করেন, ‘‘কথোপকথন থেকে বোঝা যায় যে কলতান দাশগুপ্ত তরফ থেকে সঞ্জীব দাসকে কোনও কাজের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। নির্দেশ দিয়েছিল ‘সাহেব’ বলে একজন। এখান থেকে ‘বাপ্পা’ এবং ‘দাদু’ বলে আরও দুজনের কথা উল্লেখ আছে। এর পালটা দিতে গিয়ে রাজ্যের আইনজীবী বলেন, ”এই ঘটনায় কলতান কৃষ্ণ আর সঞ্জীব অর্জুনের ভূমিকা পালন করেছে।” তাঁর আরও যুক্তি, ‘‘গত ১০ মাসে দু’জনের ১৭১ বার ফোনে কথা হয়েছে। অচেনা দুই ব্যক্তির মধ্যে ফোনে এত বার কথা হওয়া অসম্ভব! অর্থাৎ দু’জন একে অপরকে যথেষ্ট ভাল করেই চিনতেন। উভয়েই পুলিশের কাছে স্বীকার করে নিয়েছেন যে অডিওয় তাঁদেরই গলা শোনা যাচ্ছে।’’ তাতে বিচারপতি জানতে চান, বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিনা। রাজ্যের আইনজীবী জানান, এই দুজন নিজেদের কণ্ঠস্বরের কথা স্বীকার করেছেন।
এর পর বিচারপতির প্রশ্ন, তাহলে এখন আর এঁদের হেফাজতে নেওয়ার কী প্রয়োজন? বিকাশরঞ্জনের সওয়াল, কলতান দাশগুপ্ত-সহ বাকি নেতারা এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের বদনাম করার জন্য এই চক্রান্ত। সঞ্জীব দাস কথোপকথন রেকর্ড করেছেন বলে দাবি রাজ্যের আইনজীবীর। তাতে বিকাশরঞ্জনের পালটা যুক্তি, যদি সঞ্জীব দাস এই কথপোকথন রেকর্ড করে থাকেন তাহলে সেটা বেআইনি। কিন্তু সঞ্জীব দাসের কাছে কীপ্যাড ফোন ছিল, ফলে তার পক্ষে কল রেকর্ড করা সম্ভব না। তাহলে কে তা করেছেন, তা তদন্ত করে দেখা হোক। শুনানি শেষে রায়দান প্রথমে স্থগিত রাখেন বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ। পরে ৫০০ টাকা ব্যক্তিগত বন্ডে কলতানের জামিন মঞ্জুর করেন তিনি।