সংবাদদাতা, কালনা: ভাগীরথীর জলস্ফীতিতে নদীর পাড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। কালনা-১ ও পূর্বস্থলী-১ ব্লকজুড়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। হাটকালনা পঞ্চায়েতের কোম্পানিডাঙা, বিজয়নগর প্রভৃতি এলাকায় বেশকিছু বাড়িতে জল ঢুকেছে। পূর্বস্থলী-১ ব্লকের কিশোরীগঞ্জ এলাকায় ভয়াবহ নদী ভাঙন চলছে। ভাঙনে তলিয়ে যাচ্ছে রাস্তা ও চাষের জমি। বৃহস্পতিবার বন্যা কবলিত এলাকা ও ভাঙন পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন কালনা-১ বিডিও সুপ্রতীক সাহা, পূর্বস্থলী-১ বিডিও সঞ্জয় সেনাপতি সহ জনপ্রতিনিধিরা। কালনা শহরের জাপট এলাকার নদীপাড়ের বাসিন্দাদের পরিস্থিতি দেখতে হাজির হন কাউন্সিলার অনিল বসু সহ অন্যান্যরা।
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বানভাসিদের অনেকে পরিচিতের বা আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। নদীর জল বাড়ায় নান্দাই ঘুঘুডাঙার সেতু, সুলতানপুরের বেলেডাঙা সেতুর ক্ষতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলায় সেচমন্ত্রী সহ একাধিক মন্ত্রীকে নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে এলাকার সমস্যার কথা তুলে ধরেন বিধায়ক তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।
পূর্বস্থলী-১ ব্লকের কিশোরীগঞ্জ ভৌগোলিক দিক থেকে কালনা মহকুমার স্থলভাগের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। ভাগীরথী নদীর ওপারে অবস্থিত কৃষিপ্রধান গ্রাম। নৌকায় নদী পেরিয়ে নাদনঘাট থানা এলাকায় এসে কৃষিপণ্য বিক্রি করতে হয়। স্কুল থেকে বাজারঘাট সবই এপারে। নদীর পাড় বরাবর ঢালাই রাস্তা ছিল। ভাগীরথীর জল বৃদ্ধিতে ঢালাই রাস্তা সহ চাষের জমি ভাঙনের কবলে পড়েছে। বৃহস্পতিবার ভাঙন দেখতে যান বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক। প্রশাসনের কাছে বিস্তারিত তথ্য জমা দেবেন বলে তাঁরা জানান।
কালনা-১ ব্লকের হাটকালনা পঞ্চায়েতের কোম্পানিডাঙা, বিজয়নগর এলাকায় বেশকিছু বাড়িতে বুধবার থেকে ভাগীরথীর জল ঢুকতে শুরু করেছে। প্রায় ৫০টির বেশি বাড়িতে জল ঢুকেছে। বৃহস্পতিবার বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আনিসুর আলম মোল্লা সহ জনপ্রতিনিধিরা বন্যাকবলিত এলাকা ঘুরে দেখেন। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয় শিবির হিসেবে পার্শ্ববর্তী স্কুলগুলি তৈরি রাখা হলেও বানভাসিরা বাড়ি ছেড়ে আপাতত পরিচিত ও আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। কালনা-১ বিডিও সুপ্রতীক সাহা বলেন, কোম্পানিডাঙা, বিজয়নগর এলাকায় বেশকিছু বাড়িতে জল ঢুকেছে। এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। বানভাসিদের আশ্রয় শিবির হিসেবে স্থানীয় স্কুলগুলি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। অনেকে আত্মীয়-পরিজনের বাড়িতে উঠেছেন। আশ্রয় শিবিরে কেউ নেই। আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। বিশেষ কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।