• দুর্গাপুজোয় গঙ্গারামপুরের তাঁতশিল্পীদের তৈরি শাড়ি যাচ্ছে পড়শি র‌াজ্য অসমে
    বর্তমান | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, গঙ্গারামপুর: পুজো এলেই গঙ্গারামপুর শহর ও আশপাশের তাঁতি পাড়ায় ব্যস্ততা তুঙ্গে ওঠে। নাওয়াখাওয়া ভুলে দেশীয় হ্যান্ডলুম পদ্ধতিতে শাড়ি ও চুড়িদারের কাপড় বুনছেন গঙ্গারামপুরের তাঁতিরা। হাতেগোনা কয়েকদিন পরই দুর্গাপুজো। এরমধ্যেই অর্ডার অনুযায়ী মালিকদের কাপড় তৈরি করে সরবরাহ করতে হবে। তাঁতিপাড়ায় এখন অচেনা কেউ প্রবেশ করলেই শুরু হয়ে যাচ্ছে তাঁতিদের হাকডাক। ‘পাইকারি দরে পুজোর কাপড় লাগবে আসুন আমার তাঁত ঘরে’, এভাবেই চলছে তাঁতিদের বর্তমান সময়। 


    গঙ্গারামপুর শহরের বরডাঙ্গি, ঠেঙ্গাপাড়া ও মহারাজপুর এলাকায় প্রায় ঘরে ঘরে তাঁত রয়েছে। অন্যান্য সময় তাঁতিরা অন্য পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পুজোর তিন মাস আগে থেকেই তাঁরা কাপড় তৈরির তোড়জোড় শুরু করে দেন। দুর্গাপুজোকে সামনে রেখে জামদানি, টাঙ্গাইল, মেখলা ও অল্প বয়স্কদের জন্য পিওর হ্যান্ডলুম শাড়ির কদর বেড়েছে। শুধু এরাজ্যে নয় পড়শি রাজ্য অসমের মহাজনরা এবার গঙ্গারামপুরের তাঁতিদের কাছে তাঁতের শাড়ি কিনছেন। জেলা হ্যান্ডলুম দপ্তর তাঁতিদের উৎসাহ দিতে সুতো কেনা ও মেশিন ঠিক করার জন্য এককালীন টাকা দিয়েছে। 


    গঙ্গারামপুরের তাঁতি শম্ভু রাজবংশী বলেন,পুজোর সামনে কাজের চাপ বেড়েছে। বছরের বাকি সময় অন্য পেশায় কাজ করে ওভার টাইম তাঁতের কাজ করি। এবারে অসম থেকে শাড়ির বরাত রয়েছে। তাঁতের শাড়ির উপর হালকা ডিজাইনের কাজ হচ্ছে। সঙ্গে পাড়ের কাজ আলাদাভাবে লাগাতে পারবেন গ্রাহকরা, সেভাবেই শাড়ি তৈরি হচ্ছে। গঙ্গারামপুরের তাঁতের শাড়ির মধ্যে মেখলা ও টাঙ্গাইল শাড়ির বিশেষ কদর রয়েছে অসমে। পুজোয় অসমের বাসিন্দারা হ্যান্ডলুম শাড়ি পছন্দ করছেন। মহাজনরা নিয়মিত শাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। পাওয়ারলুমের বাজারে হ্যান্ডলুমের শাড়ির দাম বেশি হওয়ায় প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে তাঁতিদের। জামদানি, টাঙ্গাইল ও মেখলা শাড়িতে নতুনত্ব এনেই পুজোর বাজার ধরেছে। এক একটি শাড়ি ১৫০০ থেকে ৩০০০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। 


    তাঁতি রূপকুমার সরকার বলেন, আমাদের হ্যান্ডলুমে একটি শাড়ি তৈরি করতে সময় লাগছে প্রায় দু’দিন। পাইকারি শাড়ি বিক্রি করে এক একটি শাড়িতে বোনার খরচ হিসেবে মালিক পারিশ্রমিক দিচ্ছেন ৫০০ টাকা। অসমের শাড়ি আমরা তৈরি করছি। এই কাজ অসমে গিয়ে করলে পারিশ্রমিক আরও বেশি পাব। সরকার গঙ্গারামপুরের তাঁতিদের দিকে নজর দিক।
  • Link to this news (বর্তমান)