ডিভিসি তার আওতায় থাকা বিভিন্ন বাঁধ থেকে জল ছাড়ার ফলে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা বন্যা কবলিত। এমতাবস্থায় বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে বেরিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যে বন্যার জন্য ডিভিসি-কে দায়ী করে তিনি বলেছিলেন, 'রাজ্যকে বিপদে ফেলতে ইচ্ছাকৃতভাবে এসব করা হচ্ছে। আর গোটা বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার উদাসীন। বন্যার জন্য দায়ী ডিভিসি। ঝাড়খণ্ডকে বাঁচাতে পরিকল্পিতভাবে বাংলাকে ডোবাচ্ছে।' এই বন্যাকে 'ম্যান মেড বন্যা' বলে ডিভিসির সঙ্গে সম্পর্ক রাখবেন কিনা সেই কথাও বলেছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে ডিভিসি-র ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, ডিভিসি এত বিপুল পরিমাণ জল কখনওই ছাড়েনি। ২০০৯ সালের পর সবথেকে খারাপ বন্যা পরিস্থিতির মুখে পড়েছে রাজ্য। এই বন্যায় ইতিমধ্যে ১০০০ কিলোমিটার জমি জলের তলায়। প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষের জনজীবন বিপর্যস্ত। তাঁদের ঘরবাড়ি থেকে শুরু করে চাষের জমি, গবাদিপশু সমস্ত কিছুরই ক্ষতি হয়েছে । এমন পরিস্থিতিতে তিনি এটিকে 'ম্যান মেড বন্যা' বলতে তিনি বাধ্য হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি এও জানিয়েছেন যে, এমন পরিস্থিতি তৈরির পরও কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। রাজ্য সরকার এই অবস্থায় তাঁদের সাধ্যমতো কাজ করার চেষ্টা করছে । ইতিমধ্যেই দুর্গত মানুষদের কাছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ত্রাণসামগ্রী ও সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর চিঠিতে জানিয়েছেন, ডিভিসির জলধারণ ক্ষমতা আগের থেকে ৩৬ শতাংশ কমে গেছে। ড্রেজিং না করার জন্যই এমন হয়েছে। ফলে মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে ছাড়া জলের ফলে হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বর্ধমান-সহ দক্ষিণবঙ্গের বহু জেলায় নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ডিভিসি-র হাতে থাকা বাঁধগুলিতে ড্রেজিং-য়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন এবং ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান দ্রুত কার্যকারী করার দাবী জানিয়েছেন চিঠিতে। তিনি জানিয়েছেন, এর আগেও জলশক্তি মন্ত্রকের বৈঠকে এই বিষয়ে একাধিকবার আলোচনা করেছেন তাঁর সাংসদরা। এমনকি নীতি আয়োগের বৈঠকেও তিনি এই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন। তাই মুখ্যমন্ত্রী আবার চিঠি লিখে এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দ্রুত হস্তক্ষেপের দাবী করেছেন।