১৫ বছরে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা! ডিভিসির খামখেয়ালিতে ডুবছে বাংলা, চিঠিতে মোদিকে নালিশ মমতার
প্রতিদিন | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গৌতম ব্রহ্ম: ডিভিসির বিরুদ্ধে এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে সরাসরি অভিযোগ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেটাকে ‘ম্যান মেড বন্যা’ বলে দেগে দিয়ে মমতার দাবি, ডিভিসি আরেকটু সতর্ক হলে এই পরিস্থিতি এড়ানো যেত বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ২০০৯ সালের পর বাংলায় এত ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। অর্থাৎ দেড় দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি বাংলা।
প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, “ডিভিসি অপরিকল্পিতভাবে একক সিদ্ধান্তে মাইথন এবং পাঞ্চেত থেকে ৫ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছে। যার ফলে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলা, বিশেষ করে পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জলের তলায়। অতীতে এভাবে কোনওদিন ডিভিসি এত জল ছাড়েনি। নিম্ন দামোদর অববাহিকায় ২০০৯ সালের পর এটাই ভয়ংকরতম বন্যা। প্রায় এক হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জলের তলায়। ৫০ লক্ষ মানুষ বন্যা কবলিত।”
মমতার অভিযোগ, বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও ডিভিসি রাজ্যের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই জল ছাড়ছে। এই অপরিকল্পিত, সমন্বয়হীন জল ছাড়ার ফলে সৃষ্ট বন্যাকে ম্যান মেড বন্যা ছাড়া আর কিছু বলা যায় না। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, “ডিভিসি যেভাবে এই পরিস্থিতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে, পুরো বিষয়টিকে উপেক্ষা করছে তাতে আমাদের মতো রাজ্যগুলিকে বহুদিন ধরে ভুগতে হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি এই বন্যা উপেক্কা করা যেত।” মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, পাঞ্চেত এবং মাইথনে জল ধারণের সর্বোচ্চ সীমা পেরোনোর আগেই প্রচুর জল ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রীর সাফ কথা, অবিলম্বে ডিভিসি সতর্ক না হলে রাজ্যের পক্ষে ডিভিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না। একই সঙ্গে কেন্দ্রের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, বন্যা নিয়ন্ত্রণে নজর দেওয়া হোক। দ্রুত ড্রেজিং করে ডিভিসির জলধারণ ক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিক কেন্দ্র। মমতার বক্তব্য, সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ডিভিসির জল ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গিয়েছে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। তাই দ্রুত ড্রেজিং করার জন্য অর্থবরাদ্দ করা হোক। একই সঙ্গে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্যও প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার করেছেন মমতা।