• দামোদরের ড্রেজিংয়ের ভাবনায় সরকার, চিন্তা নাব্যতা নিয়ে
    এই সময় | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সঞ্জয় দে, দুর্গাপুর

    রাজ্যে সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতিতে আলোচনা উঠে এসেছে পাঞ্চেত ও মাইথন জলাধার ও দামোদরের নাব্যতা। ওই দুই জলাধার থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়া হলেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে নিম্ন দামোদর অববাহিকায়। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, দুর্গাপুর ব্যারাজে জলধারণ ক্ষমতা কমেছে প্রায় ৫২ শতাংশ। ব্যারাজে জলধারণ ক্ষমতা বাড়াতে গেলে অবিলম্বে নদীর পলি ড্রেজিং করে তুলতে হবে। না হলে আগামী দিনে পরিস্থিতি জটিল হবে বলে জানিয়েছে দামোদরে সমীক্ষা চালানো পুনের সেন্ট্রাল ওয়াটার অ্যান্ড পাওয়ার রিসার্চ স্টেশন।অতীতে ড্রেজিংয়ের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে একাধিকবার চিঠি দিয়েছে রাজ্য। ২০০৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত জলসম্পদের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা ৬ বার দামোদরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে গিয়েছেন। এমনকী এক সময়ে দামোদর পরিদর্শন করেছিলেন কেন্দ্রীয় জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের মন্ত্রী উমা ভারতী।

    নমামী গঙ্গে প্রকল্পের মতো দামোদর অ্যাকশন প্ল্যানে ড্রেজিংয়ের কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দামোদরের অবস্থার কোনও বদল ঘটেনি। তাই এ বার কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী না থেকে নিজেদের উদ্যোগে দামোদরে ড্রেজিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। ড্রেজিংয়ের কাজ করবে ওয়েস্টবেঙ্গল মাইনিং অ্যান্ড মিনারেল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন। প্রাথমিক ভাবে তার কাজ শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে রাজ্য সেচ দপ্তরের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় ওয়েস্টবেঙ্গল মাইনিং অ্যান্ড মিনারেল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন।

    এর পরেই সেচ দপ্তর পুনের সেন্ট্রাল ওয়াটার অ্যান্ড পাওয়ার রিসার্চ স্টেশনকে দিয়ে দামোদরে সমীক্ষা করায়। সমীক্ষা শেষে সেন্ট্রাল ওয়াটার অ্যান্ড পাওয়ার রিসার্চ স্টেশন জানায়, মাইথন থেকে দুর্গাপুর ব্যারাজ পর্যন্ত এলাকায় মাটি ও পাথর জমে প্রায় ৬টি জায়গায় দ্বীপের চেহারা নিয়েছে। এ ছাড়া ১০৬টি জায়গায় ছোট ও মাঝারি মাপের মাটি ও পাথরের স্তর জমেছে। সেখানে মাথাচাড়া দিয়েছে বড় বড় গাছ। এর ফলে দামোদরের জলধারণ ক্ষমতা কমেছে প্রায় ৫২ শতাংশ।

    রাজ্য সেচ দপ্তরের দুর্গাপুর শাখার এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় মজুমদার বলেন, 'ব্যারাজের জলধারণ ক্ষমতা ২১১.৪৫ ফিট। সেটা অনেকটাই কমে গিয়েছে। ড্রেজিংয়ের জন্য আমরা মাইনিং অ্যান্ড মিনারেল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনকে রিপোর্ট দিয়েছি। তাতে ব্যারাজ থেকে আপার বেসমেন্টের ২০ কিমি পর্যন্ত পলি তোলার কথা বলা হয়েছে। এই অংশের পলি তুলতে পারলে জলধারণ ক্ষমতা অনেকটাই বেড়ে যাবে। দামোদর নিয়ে ওরা আরও কিছু তথ্য চেয়েছে। এটা হলে সেচের সময়ে মাইথন, পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়ার ভরসায় আর থাকতে হবে না।'

    তিনি জানান, ড্রেজিংয়ের কাজে পশ্চিম বর্ধমান ও বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনকে যুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু, ওই বিপুল পরিমাণ পলি রাখা হবে কোথায়? এ বিষয়ে প্রাথমিক একটি আলোচনা হয়েছে। ইসিএলের পরিত্যক্ত খোলামুখ খনিগুলোকে ব্যবহারের কথা সেচ দপ্তরের মাথায় রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
  • Link to this news (এই সময়)