‘জল নামার পর দেখতে এলেন?’ বন্যাবিধ্বস্ত সোনামুখী যেতে প্রশ্ন বিজেপি বিধায়ককে, কী জবাব?
আনন্দবাজার | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে দুর্গতদের ক্ষোভের মুখে পড়লেন বাঁকুড়ার সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি। শুক্রবার দুপুরে সোনামুখী ব্লকের পাণ্ডেপাড়ায় গিয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক। এলাকাবাসীর অভিযোগ, যখন পরিস্থিতি বেশি খারাপ ছিল, তখন বিধায়ককে তাঁরা পাননি। যদিও বিক্ষোভের মুখে পড়ে অস্বস্তি এড়াতে রাজ্যের শাসকদলকেই কাঠগড়ায় তোলেন বিধায়ক। তৃণমূল পাল্টা দুষেছে বিজেপি বিধায়ককে।
গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি এবং দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ছাড়া জলে দামোদর নদ উপচে গত মঙ্গলবার বিকেল থেকে জল ঢুকতে শুরু করে বাঁকুড়ার সোনামুখী ব্লকে। বানভাসি অবস্থা হয় সোনামুখী ব্লকের সমিতি মানা, কেনেটি মানা, পাণ্ডে পাড়া এবং উত্তর নিত্যানন্দপুর গ্রামে। পরিস্থিতি এমন হয় যে ওই চারটি গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাকে বাড়ি ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিতে হয় সরকারি ত্রাণশিবিরে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ধীরে ধীরে দুর্গাপুর ব্যারাজ জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়ে আনায় ওই দিন দুপুর থেকে পরিস্থিতির খানিক উন্নতি হয়। শুক্রবার সকালের মধ্যে জলমুক্ত হয়ে যায় অধিকাংশ এলাকা। দুপুরে অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে এই এলাকাগুলি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বিধায়ক দিবাকর। সমিতি মানা গ্রাম ঘুরে তিনি পাণ্ডে পাড়া পৌঁছতেই তাঁকে ঘিরে গ্রামবাসীদের ক্ষোভ আছড়ে পড়ে। তাঁরা প্রশ্ন করেন, ‘‘বন্যার সময় বিধায়ক কোথায় ছিলেন?’’ কেউ জবাব চান, ‘‘কেন বন্যার জল নামার পর আপনি এলাকায় এলেন?’’ পাশাপাশি বিধায়ক ত্রাণ না নিয়ে যাওয়ায় আর একপ্রস্ত ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয়েরা। অরুণ সরকার নামে পাণ্ডে পাড়া গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমরা ভোট দিয়ে বিধায়ককে জিতিয়েছি। কিন্তু আমাদের দুর্দিনে তাঁকে পেলাম না। তিন-চার দিন আমরা জলবন্দি ছিলাম। তখন বিধায়ক আসেননি। আজ (শুক্রবার) এলাকা জলমুক্ত হওয়ার পর তিনি এলেন ঠিকই। কিন্তু কোনও ত্রাণের ব্যবস্থা করেননি। স্বাভাবিক ভাবেই আমরা ক্ষুব্ধ।’’
বিধায়ক অবশ্য জানান, তাঁর শরীর ভাল ছিল না।তাই ক’টা দিন আগে আসতে পারেননি। দিবাকর বলেন, ‘‘অসুস্থ ছিলাম। চিকিৎসার কারণে আমি বন্যার আগে থেকেই ভুবনেশ্বরে ছিলাম। তাই বন্যার সময় যেতে পারিনি। বৃহস্পতিবার রাতে ফিরে আসার পর আজ সকালেই বেরিয়েছি এলাকায়। আসলে সরকারি ভাবে আসা ত্রাণ শাসকদলের নেতারা বেছে বেছে কিছু জনকে দিলেও অধিকাংশ দুর্গত মানুষ তা পাননি। তাই তাঁদের মধ্যে স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষোভ জন্মেছে। আমি মানুষের কথা শুনি বলেই আমাকে সেই ক্ষোভের কথা বলেছেন।’’ অন্য দিকে, তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বন্যার সময় মানুষ বিধায়ককে দেখতে পাননি। এখন বন্যার জল সরে যাওয়ার পর তিনি এলাকায় নাটক দেখাতে গেলে মানুষ তো বিক্ষোভ দেখাবেনই। এটাই স্বাভাবিক।’’