এই সময়, নয়াদিল্লি: মাত্র ১০ সেকেন্ড৷ এই ১০ সেকেন্ডের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে খারিজ হয়ে গেল ইডির আবেদন! শুনতে অবাক লাগলেও বাস্তবে এই ঘটনাই ঘটেছে শুক্রবার৷ কয়লা পাচার মামলায় রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটককে দিল্লিতে সমন পাঠানো সংক্রান্ত ইডির আবেদন এ দিন শোনার সঙ্গে সঙ্গেই খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।এই সমন সংক্রান্ত দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশ দীর্ঘ তিন মাসেরও বেশি সময় পরে কেন চ্যালেঞ্জ করা হলো— সেই প্রশ্ন তুলেই ইডির আর্জি খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। ফলে কয়লা পাচার মামলার তদন্তে সুপ্রিম কোর্টে ইডি বড়সড় ধাক্কা খেলো বলেই মনে করছেন আইনজ্ঞদের একাংশ।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানির জন্য ২১ নম্বর আইটেম ছিল ইডি বনাম মলয় ঘটকের এই মামলা৷ কয়লা পাচার মামলায় রাজ্যের আইনমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেশ কয়েক বার দিল্লিতে তলব করেছিল ইডি। তবে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে সেই হাজিরা এড়ান মলয় ঘটক। পাশাপাশি কেন দিল্লির পরিবর্তে তাঁকে কলকাতায় তলব করা হচ্ছে না, সে প্রশ্ন তুলে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।
দিল্লি হাইকোর্টে দায়ের করা মামলায় মলয়ের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়েছিল, তাঁর চূড়ান্ত ব্যস্ততা সত্ত্বেও কয়লা পাচার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁকে বারবার দিল্লিতে তলব করে হেনস্থা করছে ইডি৷ তিনি কয়লা পাচার মামলায় ইডির তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করার পরেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে এই ভাবে হেনস্থা করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা৷ দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষে দিল্লি হাইকোর্ট জানায়, দিল্লি নয়, কয়লা পাচার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে হলে মলয়কে কলকাতাতেই তলব করতে হবে৷
এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে ইডি৷ শুক্রবার নির্ধারিত সময়ে এই মামলার শুনানিতে অংশগ্রহণ করার জন্য প্রধান বিচারপতির এজলাসে উপস্থিত ছিলেন ইডির কৌঁসুলি, কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেল এসভি রাজু৷ তাঁকে দেখেই প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানতে চান, ‘১৮১ দিন পরে এই মামলা করেছেন কেন?’
রাজু এর জবাব দেওয়ার আগেই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিলম্বে মামলা দায়ের করার কারণে খারিজ করা হচ্ছে ইডির আবেদন৷’ ঘটনা হলো, সপ্তাহ দেড়েক আগে কয়লা পাচার মামলায় দিল্লিতে নোটিস পাঠানো সংক্রান্ত মামলায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্জি খারিজ করে দেয় বিচারপতি বেলাএম ত্রিবেদীর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।
অর্থাৎ একই মামলায় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে হলে দিল্লিতে তলব করা যাবে বলে জানিয়ে দেয় শীর্ষ আদালত। কিন্তু মলয়ের ক্ষেত্রে তদন্তকারী এজেন্সির আবেদনে বিলম্ব নিয়েই সুপ্রিম কোর্ট এ দিন উষ্মা প্রকাশ করেছে।