• কী ভাবে জামিন অভিযুক্তের! হাইকোর্টে প্রশ্নে বিদ্ধ পুলিশ
    এই সময় | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • এই সময়: এক আইএএস অফিসারের বাড়িতে ঢুকে তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণের মামলায় একের পর এক নতুন অভিযোগে বিদ্ধ লেক থানা। এই ঘটনায় আগেই পুলিশের বিরুদ্ধে লঘু ধারায় মামলা রুজুর অভিযোগ উঠেছিল। তারপরে মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে। আদালতের গুঁতো খেয়ে পুলিশ তুলনামূলক ভাবে কঠোর ধারা প্রয়োগ করে।তারপরেও নিম্ন আদালত থেকে অভিযুক্ত জামিন পেয়ে গিয়েছেন জানতে পেরে শুক্রবার যুগপৎ বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট। বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের প্রশ্ন, ‘হাইকোর্টে যে এ নিয়ে মামলা হয়েছে এবং আদালত যে নির্দেশ দিয়েছে, সেই ব্যাপারটা কি পুলিশ নিম্ন আদালতে জানিয়েছিল?’

    এই আইএএস অফিসারের বাড়ি কলকাতার লেক থানা এলাকায় হলেও তিনি ভিন রাজ্যের ক্যাডার এবং অন্য রাজ্যে বর্তমানে কর্মরত। তাঁর স্ত্রী থাকেন কলকাতায়। গত জুলাই মাসের শুরুতে এলাকার এক প্রভাবশালী প্রোমোটারের বিরুদ্ধে ওই আইএএস অফিসারের বাড়িতে ঢুকে তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ হয়। গোড়া থেকেই তদন্তে ত্রুটির অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে।

    প্রথমে মামলার তদন্তকারী অফিসার হিসেবে এক পুরুষ অফিসারকে নিয়োগ, নির্যাতিতার মেডিক্যাল টেস্ট না-করানো, তুলনায় লঘু ধারা দিয়ে অভিযুক্তকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া এবং নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি না নেওয়ার অভিযোগ ছিল। গ্রেপ্তারির পরে প্রথম দিনেই নিম্ন আদালত জামিন দিয়ে দেয় অভিযুক্তকে।

    হাইকোর্টে মামলা দায়ের হওরার পরে পুলিশ সেই সব ত্রুটি শোধরানোর কাজ শুরু করে। অভিযুক্তের জামিন খারিজের আবেদন জানায় পুলিশ। কিন্তু হাইকোর্টে মামলা চলার মধ্যেই ওই অভিযুক্ত জেলা আদালতে আগাম জামিন চেয়ে মামলা করেন এবং সেখান থেকে নিজের পক্ষে রায়ও পেয়ে যান।

    শুক্রবার হাইকোর্টে মামলাকারীর আইনজীবী অন্তরীক্ষ বসুর প্রশ্ন, ‘যেখানে হাইকোর্টের হস্তক্ষেপের পরে কঠোর ধারা প্রয়োগ করা হলো, সেখানে পুলিশ অভিযুক্তকে নতুন করে গ্রেপ্তার না করে কেন আগের জামিন খারিজের আবেদন করে বসে রইল? পাশাপাশি নতুন ধারা প্রয়োগের পরে অভিযুক্তকে আগাম জামিনের সুযোগ করে দেওয়া হলো কেন? আবার হাইকোর্টে যে এই মামলা চলছে, নিম্ন আদালতের কাছেও তা অন্ধকারে রাখা হয়েছে।’

    মামলাকারীর আইনজীবী আরও অভিযোগ করেন, পুলিশ এখানে নির্যাতিতা নয়, অভিযুক্তকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য যা যা করণীয়, তা-ই করছে। নিম্ন আদালতে আগাম জামিনের মামলায় কেস ডায়েরি তলব করা হয়েছিল ৬ সেপ্টেম্বরে। অথচ সেখানে আসল তথ্য জানায়নি। যদিও রাজ্যের কৌঁসুলির দাবি, ‘প্রথম যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল, সেখানে ধর্ষণের উল্লেখই করা হয়নি। পরে অভিযোগকারিণী ধর্ষণের বিষয়টি জানালে নতুন ধারা যুক্ত করা হয়।’
  • Link to this news (এই সময়)