প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগদান করায় ক্লাস থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ
এই সময় | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া দুই ছাত্রীকে ক্লাসে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার সারদামণি কলেজে। অপর্ণা মণ্ডল ও প্রেয়সী টুডুকে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও ওই কলেজের ভূগোল বিভাগের প্রধান শ্যামল সাঁতরা ক্লাসে ঢুকতে দেননি বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় সরব হয়েছেন বিরোধীরা। তারা বিষয়টিকে ‘থ্রেট কালচার’ বলে উল্লেখ করেছেন।রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ উঠেছে?
অভিযোগ, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জন্যই ওই দুই ছাত্রীকে ক্লাস থেকে বার করে দিয়েছেন শ্যামল সাঁতরা। অপর্ণা মণ্ডল বাঁকুড়ার সারদামণি কলেজে ভূগোল বিভাগের পঞ্চম সিমেস্টার এবং প্রেয়সী টুডু তৃতীয় সিমেস্টারের ছাত্রী।
অপর্ণা ‘এই সময় অনলাইন’-কে বলেন, ‘আমরা আরজি করের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে রাস্তায় স্লোগান লিখি। ওই ঘটনার প্রতিবাদ করায় কলেজ থেকে আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। কিন্তু আমরা কর্মসূচি নিয়েছিলাম কলেজের বাইরে।' তিনি আরও বলেন, 'আমাদের ক্লাস থেকে বার করে দিয়েছেন শ্যামল সাঁতরা। আমরা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন যেহেতু আমরা বাইরে আরজি কর নিয়ে আন্দোলন করেছি তাই আমাদের ক্লাস থেকে বার করা হচ্ছে।' এই ছাত্রীর আরও অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে অধ্যক্ষের কাছে গেলে তিনি বিভাগের মধ্যেই বিষয়টি মিটিয়ে নিতে বলেন। তাঁদের ক্লাসে ফেরানোর কোনও উদ্যোগ অধ্যক্ষ নেননি।
কী বলছেন অভিযুক্ত অধ্যাপক?
বাঁকুড়ার সারদামণি কলেজের ভূগোল বিভাগের প্রধান, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা এই অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, 'আমার বিভাগে একটা সুস্থ পরিবেশ রয়েছে। ২৫০ পড়ুয়া এখানে পড়াশোনা করেন। পড়ুয়ারাই লিখিত জানিয়েছিলেন, আন্দোলনে যাতে তাঁদের জোর করে নিয়ে যাওয়া না হয় বা টাকা আদায় করা না হয় তা নিশ্চিত করতে। কয়েকজনের নামে পড়ুয়রা অভিযোগও করেন। আমি তাঁদেরই চিহ্নিত করে বলেছি ক্লাস করার প্রয়োজন নেই।' থ্রেট কালচারের অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেন তিনি।
এই ঘটনায় সরব ছাত্রীরা। শনিবার সকাল থেকে কলেজের গেটের বাইরে ঘটনার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচির উদ্যোগ নিয়েছেন ছাত্রীদের একাংশ। একজন অধ্যাপক কী ভাবে দুই ছাত্রীকে আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় ক্লাস থেকে বার করে দিতে পারেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। এই ঘটনা প্রসঙ্গে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, 'ছাত্রীরা আমাকে অভিযোগ জানালে প্রথমে তা বিভাগের মধ্যে মিটিয়ে নিতে বলি। আমি এই বিষয়টি নিয়ে অধ্যাপকের সঙ্গে কথা বলব।' তবে এই ঘটনার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক যোগ মানতে চাননি তিনি।
এ দিকে অভিযোগটি সামনে আসার পর রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বামেরা। বাম যুবনেত্রী মৌমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, 'শ্যামল সাঁতরাকে এই ঘটনার জন্য অন ক্যামেরা ক্ষমতা চাইতে হবে।'
পাল্টা বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলেন, 'ছাত্রীদের ক্লাস থেকে বার করে দেওয়ার কোনও অভিযোগ শুনিনি। আমি অধ্যাপকের থেকে জেনেছি ওই দুই ছাত্রী রাজনৈতিক সংগঠনের নামে জোর করে চাঁদা তুলছিলেন। তাই তাঁদের ধমক দেওয়া হয়েছে।'