সুদীপ রায়চৌধুরী: বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য টানাপোড়েনের মধ্যে এবার ঢুকে পড়লেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তাঁর দাবি, বাংলার বন্যা পরিস্থিতি ডিভিসির জন্য নয়। বরং, কংসাবতী বাঁধ থেকে জল ছাড়াতেই এই বন্যা তৈরি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে রাজ্যপাল বলছেন, ডিভিসিকে দোষারোপ না করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত রাজ্যের।
ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতিকে ‘ম্যান মেড বন্যা’ বলে দেগে দিয়ে ডিভিসির সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ২০০৯ সালের পর বাংলায় এত ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। অর্থাৎ দেড় দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি বাংলা। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, “ডিভিসি অপরিকল্পিতভাবে একক সিদ্ধান্তে মাইথন এবং পাঞ্চেত থেকে ৫ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছে। যার ফলে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলা, বিশেষ করে পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জলের তলায়। অতীতে এভাবে কোনওদিন ডিভিসি এত জল ছাড়েনি। নিম্ন দামোদর অববাহিকায় ২০০৯ সালের পর এটাই ভয়ংকরতম বন্যা। প্রায় এক হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জলের তলায়। ৫০ লক্ষ মানুষ বন্যা কবলিত।”
এদিন রাজ্যপাল পালটা দাবি করলেন, যে যে জেলাগুলিতে বন্যার জন্য মুখ্যমন্ত্রী ডিভিসিকে দায়ী করছেন, সেই বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর কোনভাবেই DVC’র অববাহিকার মধ্যে পড়ে না। কংসাবতী, শিলাবতী ও দ্বারকেশ্বর নদী এলাকায় প্রচুর বৃষ্টিপাত এবং কংসাবতী নদীর উপর মুকুটমণিপুরে বাঁধ থেকে জল ছাড়ার ফলেই এইসব জায়গা প্লাবিত হয়েছে।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের বন্য পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যপাল। তাঁর দাবি, ডিভিসির যে বাঁধ তৈরি হয়েছিল, তা তৈরি হয়েছিল ছোটখাটো বন্যা পরিস্থিতি আটকানোর জন্য। এছাড়া বাঁধ যদি জল না ছাড়ে, তাহলে বাঁধের ক্ষতি। এভাবে ডিভিসিকে দোষারোপ না করে রিস্থিতি মোকাবিলায় নিজের দায়িত্ব পালন করুক রাজ্য সরকার।