• প্রতারণার জাল ছড়ানো ছিল কানাডা পর্যন্ত, হাওড়ার কল সেন্টারে হানা দিয়ে উদ্ধার বিপুল টাকা
    ২৪ ঘন্টা | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • দেবব্রত ঘোষ: আন্তর্জাতিক প্রতারণা চক্রের সন্ধান পেল হাওড়া সিটি পুলিস। ভুয়ো কল সেন্টারের আড়ালে বিদেশিদের প্রতারণার অভিযোগে পুলিসের হাতে গ্রেফতার ৩ দুষ্কৃতী। গতকাল রাতে হাওড়া সিটি পুলিসের গোয়েন্দা এবং সাইবার সেলের অফিসারেরা বালি ফায়ার ব্রিগেড অফিসের কাছে একটি ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে ৩ জনকে হাতেনাতে পাকড়াও করে। ধৃতদের নাম বীরেন্দ্র পান্ডে, শ্যাম মিত্তাল এবং চন্দ্রশেখর রায়। ওই অফিস থেকে উদ্ধার হয় নগদ ২৪ লক্ষ টাকা, ৬ টি মোবাইল সেট, ১৪ টি সিপিইউ, একটি ল্যাপটপ, ১৬টি ডেস্কটপ। এছাড়াও তাদের ক্রিপ্টো কারেন্সি অ্যাকাউন্ট থেকে ২৫ হাজার ৩০০ কানাডিয়ান ডলার উদ্ধার করা হয়।

    কীভাবে চলত এই প্রতারণা চক্র ?

    হাওড়া সিটি পুলিসের ডিসি নর্থ বিশপ সরকার জানিয়েছেন, গত কয়েকদিন ধরে বালির ওই ভুয়ো কল সেন্টারের ওপর গোপনে নজরদারি চালানো হচ্ছিল। এরপরই গতকাল রাতে পুলিস তাদের ওই অফিসে হানা দেয়। ডিসিপি নর্থ বিশপ সরকার জানান, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে তারা মূলত বিদেশি নাগরিকদের প্রতারণার জন্য টার্গেট করত। নিজেদের মাইক্রোসফট অথবা উইন্ডোজ কোম্পানির টেকনোলজিক্যাল সাপোর্ট কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে ইন্টারনেট প্রটোকলের মাধ্যমে তাদের ফোন করত।

    ডেক্সটপ বা ল্যাপটপ সারিয়ে দেওয়ার নামে তাদের এনি ডেক্স বা টিম ভিউয়ার এপ্লিকেশন ডাউনলোড করাতে বলত তাদের কম্পিউটার বা ল্যাপটপে। এরপরেই কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপের নিয়ন্ত্রণ তাদের নিজেদের হাতে নিয়ে নিত। পরবর্তী পর্যায়ে তাদের কমপিউটারে ভাইরাস বা অন্যকিছু সমস্যা রয়েছে বলে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করত। টাকা নেওয়া হত বিট কয়েনের মাধ্যম। বিটকয়েনের মাধ্যমে কিউ আর কোড তৈরি করে তাদের পাঠানো হত। সেখানেই তারা টাকা জমা দিতেন। পরে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরিয়ে ফেলা হত।

    প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের অনুমান প্রায় এক বছর ধরে এই চক্র কাজ করছিল। এভাবেই বহু কানাডিয়ান নাগরিকের টাকা তারা হাতিয়ে নিয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে আন্তর্জাতিক কোন প্রতারণা চক্রের যোগ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে হাওড়া সিটি পুলিস। ধৃতদের পুলিসি হেফাজতে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)