গোপাল সোনকার, এই সময় অনলাইনশেষবার এসেছিলেন প্রায় দেড় বছর আগে। পাতে ছিল গরম কচুরি আর ল্যাংচা। সঙ্গে চিনি ছাড়া চা। শক্তিগড়ের রাস্তা দিয়ে গেলে ‘ল্যাংচা কুঠি’তে একবার ঢুঁ মারেন তিনি। শীঘ্রই দিল্লি থেকে ফিরছেন জামিন পেয়ে। বাড়ি ফেরার পথে ফের দাঁড়াবেন এখানে? নিজের মাটির সুস্বাদু খাবারের স্বাদ নেবেন বীরভূমের ‘বেতাজ বাদশা’? অপেক্ষায় দোকানের মালিক থেকে কর্মচারীরা।
২০২৩ সালের মার্চ মাসে জোকা ইএসআই হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করতে নিয়ে যাওয়ার সময় এই দোকানেই জলখাবার খেয়েছিলেন তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। এরপরই দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। দেড় বছরের বেশি তিহারে হাজতবাস। জামিনে মুক্তি পেয়ে এবার নিজগৃহে ফিরছেন তিনি। ফেরার পথে ফের ঢুকবেন শক্তিগড়ের বিখ্যাত দোকানে?
দোকানের কর্মচারী প্রবোধরঞ্জন সরকার বলেন, ‘প্রায় ১ বছর আগে তিনি শেষ এসেছিলেন। উনি আসা মানেই আমাদের ভালো বিক্রি। কারণ ওঁর সঙ্গে আরও অনেকে আসেন। ফলে বিক্রিবাটাও ভাল হয়।’ দোকানের কর্মচারী জানান, অনুব্রত মণ্ডল এই দোকানের পুরনো দিনের খরিদ্দার। দোকানে এলে শুধু জলযোগ সারেন তাই নয়, অনেক কিছু কিনেও নিয়ে যান। ফলে তাঁরা সব সময়ই চাইছেন উনি দোকানে বারবার আসুক, বিক্রিও ভালো হোক। কেষ্ট দা’র জেল মুক্তি হওয়ার খবর পেতেই আশা জেগেছে মালিক থেকে কর্মচারীদের মধ্যে।
অন্যদিকে, অনুব্রতের জেলমুক্তির খবর আসতেই পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম, কেতুগ্রাম এবং মঙ্গলকোট এলাকায় নতুন করে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। অনেক নেতাই সমাজমাধ্যমে লিখছেন, ‘যারা বলেছিলেন ঢাকি সমেত বিসর্জন দিয়ে দেব, তাদেরকে বলে যাই ঢাক-ঢাকি, উৎসব একসঙ্গে ফিরছে।’
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১১ অগস্ট গোরু পাচার মামলায় অনুব্রতকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। বীরভূমের নিচুপট্টি এলাকায় নিজের বাড়ি থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। কিছুদিন সিবিআই হেফাজতে থাকার পর প্রথমে তাঁকে আসানসোল সংশোধনাগারে নিয়ে রাখা হয়। এরইমধ্যে গোরু পাচার মামলায় আর্থিক তছরুপের অভিযোগের ভিত্তিতে ইডি স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত শুরু করে। তারপর হেফাজতে থাকাকালীনই ওই বছরের নভেম্বর মাসে অনুব্রতকে গ্রেপ্তার করে ইডিও। গত ২১ মার্চ তিহার জেলে পাঠানো হয় তাঁকে।