স্টাফ রিপোর্টার: পুজোর আগে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের আশঙ্কা। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, নিম্নচাপের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় আবারও তুমুল বৃষ্টির সম্ভাবনা। পুজোর মরশুম মানেই পাড়ায় পাড়ায় মণ্ডপ। থিমের মণ্ডপের নিচে ত্রিপল। তৈরি হবে একাধিক জল জমার জায়গা। জন্মাতে পারে ডেঙ্গুর বাহক এডিস ইজিপ্টাই। ওই আবহে সর্তক কলকাতা পুরসভা। ডেঙ্গু সচেতনা বাড়াতে ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, ‘উত্তর আন্দামান সাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হচ্ছে। সোমবার এটি নিম্নচাপে রূপ নিয়ে উত্তর-পশ্চিম ও পশ্চিম- মধ্য বঙ্গোপসাগর ধরে এগিয়ে যাবে। এর প্রভাবে সোম থেকে বুধবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি বাড়বে।’ গত সপ্তাহের নিম্নচাপের বৃষ্টিতে বানভাসী একাধিক জেলা। প্রাক পুজো বৃষ্টির পূর্বাভাসে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বন্যা কবলিত এলাকাগুলি।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম শনিবার শহরের সমস্ত পুজো উদ্যোক্তাদের জানিয়েছেন, ডেঙ্গু নিয়ে সতর্ক থাকুন। মণ্ডপ প্রাঙ্গণে ডেঙ্গু সচেতনতার জন্য হোর্ডিং লাগান। সচেতনতার উপরেই দাঁড়িয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ। পাড়ায় পাড়ায় প্রচার হলেও সচেতনতা যে এখনও তলানিতে তার প্রমাণ সম্প্রতি হাতেনাতে পেয়েছেন মেয়র নিজেই। সম্প্রতি সকালে বাড়িতে খাবার খেতে বসেছিলেন। জানালা দিয়ে দেখতে পান পাশের বাড়ির কার্নিশে খালি প্লাস্টিকের কৌটো। যেমন কৌটো করে খাবার দেয় অনলাইন ফুড ডেলিভারি অ্যাপগুলো। তারপর? ‘‘নিশ্চই কেউ ফেলেছে। খালি কৌটোটায় ভর্তি বৃষ্টির জল। আমি নিজে ঝুলঝাড়ু জোগাড় করে জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে ওই কৌটো ফেলেছি।’’ মেয়রের কথায়, ‘‘দূর থেকে দেখতে পাইনি ওতে মশার লার্ভা জন্মেছিল কি না। তবে যদি জন্মে থাকে তাহলে চিন্তার বিষয়।’’ পতঙ্গবিদরা বলছেন এমন পরিষ্কার জলে ডিম পাড়ে ডেঙ্গুর বাহক এডিস ইজিপ্টাই মশা। কলকাতা পুরসভার তথ্য বলছে, গত বছরের তুলনায় অনেকটাই কমেছে ডেঙ্গুর সংক্রমণ।
২০২৩-এ ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শহরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৮০২। এবছর সেখানে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৪১০। গত বছর মাঝ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শহরে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৭২০। এবছর সেখানে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত ৩০১৯। সংক্রমণ কমলেও সতর্ক থাকতে চায় কলকাতা পুরসভা।
ডেঙ্গুর পাশাপাশি ভাইরাল জ্বরের প্রকোপ ছেয়েছে শহরে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মঞ্চমণি ঘটক জানান, এই সময় সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। তার প্রধান উপসর্গ জ্বর-সর্দি কাশি। অন্যদিকে, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর গা বমি-বমি, গা-হাতে-পায়ে প্রচণ্ড ব্যথার উপসর্গ দেখা যায়। এসএসকেএমের ডা. মঞ্চমণি ঘটক জানান, জ্বর তিন-চারদিন হলে এনএসওয়ান অ্যান্টিজেন টেস্ট করিয়ে নিতে পারেন। পাঁচদিনের উপর জ্বর থাকলে ডেঙ্গু আইজিএম পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াই শ্রেয়। মেয়র জানান, পুজোর মধ্যেও ডেঙ্গু সচেতনতায় প্রতিটি পাড়ায় সপ্তাহে চারদিন অটোয় মাইকিং হবে।