এই সময়, কালনা: বাঁশের বেড়ার উপর টিনের চাল। তার লাগোয়া পাকা দেওয়ালের উপর টিনের চালার একটি ঘর। নাদনঘাটের হেমায়েতপুর মোড়ে পূর্ত দপ্তরের জমিতে প্রায় ৪০ বছর ধরে ছিল পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক ও রাজের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের পার্টি অফিস। শনিবার সেই দলীয় কার্যালয় নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সরিয়ে নিলেন স্বপন। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, সরকারি জমিতে কোনও কার্যালয় করা যাবে না। সেই নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে দলীয় কার্যালয় সরিয়ে নিলেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।১৯৮৭ সালে কংগ্রেসে থাকাকালীন কার্যালয়টি তৈরি করিয়েছিলেন স্বপন। ১৯৯৮ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠার পর সেই দলের সঙ্গেই রয়েছেন তিনি। এই কার্যালয়টির সঙ্গে তাঁর ও দলের যোগের কথা এলাকার প্রায় সবারই চেনা। স্বপন বলেন, ‘বহু স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে এই কার্যালয়ের সঙ্গে। সিপিএমের বিরুদ্ধে এখান থেকেই লড়াই পরিচালনা করেছি।’
এ দিন পূর্ত দপ্তরের ওই জমি খালি করে দিয়ে স্বপন বলেন, ‘যখন এই কার্যালয় তৈরি হয়েছিল তখন আমি কংগ্রেসে। বাঁশের বেড়া আর টিনের চালের ঘরে বসার জন্য ছিল খেজুরপাতার চাটাই। ১৯৯৮ সালে মমতাদির আহ্বানে তৃণমূলে যোগ দিই। এই অফিস থেকেই সব পরিচালনা করেছি। ৪০ বছরে বিভিন্ন সময়ে এই কার্যালয়ে রাতও কাটিয়েছি।’
১৯৯৮ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৎকালীন অবিভক্ত বর্ধমান জেলায় একটিই পঞ্চায়েত সমিতিতে জিতেছিল তৃণমূল। সেটা ছিল পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতি। সেই থেকে এখনও এই পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের দখলে রয়েছে। এই কথা মনে করিয়ে দিয়ে স্বপন বলেন, ‘দলনেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন সরকারি জায়গায় কোনও কার্যালয় করা যাবে না। সেই নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে দলীয় কার্যালয় সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এর আগে পূর্বস্থলী ১-এর শ্রীরামপুর গ্রামীণ হাসপাতালের সামনে এসটিকেকে রোড চওড়া করার সময়ে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সেখানকার দলীয় কার্যালয় ভাঙিয়েছি। আমাদের কাছে মমতাদির নির্দেশই সব থেকে বড়। সেটা মেনে নিয়েই কার্যালয় সরিয়ে নেওয়া হলো।’