• ‘বিষবৃক্ষ উপড়ানোর সময় এসেছে’! পরিচালক সংগঠনের মন্তব্যে সায় পরমব্রত, ঋত্বিক, কৌশিকদের
    আনন্দবাজার | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • কেশসজ্জা শিল্পীর আত্মঘাতী হতে চাওয়ার ঘটনায় টালমাটাল টলিপাড়া। বেশ কিছু দিনের জন্য সাসেপন্ড করা হয়েছিল ওই শিল্পীকে। তার পরে ফিরে আসেন তিনি। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, একের পরে এক কাজ কেড়ে নেওয়া হয় তাঁর কাছ থেকে। শনিবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সেই কেশসজ্জা শিল্পী। অনেক টালবাহানার পরে ওই ঘটনার লিখিত অভিযোগ জমা নিয়েছে রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ।

    এর মধ্যেই ডিরেক্টর অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার তরফে সমাজমাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। সেই পোস্ট নিজেদের পাতায় ভাগ করে নেন করেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ও ঋত্বিক চক্রবর্তীও।

    সেই পোস্টে এক প্রকার সাবধান বাণীর সুরেই লেখা হয়েছে, “এ রাজ্যের সকল সিনেমাকর্মী, টেলিভিশনকর্মী, ওটিটি, শর্ট ফিল্ম, বিজ্ঞাপন নির্মাতা ও আমাদের কাজের যারা দর্শক, সেই নাগরিক সমাজকে কিছু কথা জানানোর খুবই দরকার। জল অনেকদিন ধরেই বাড়ছে, এখন বিপদ ঘণ্টা বেজে গিয়েছে, রাজ্যের গ্রামাঞ্চলেও, আমাদের কর্মস্থলেও।”

    পোস্টে জানানো হয়, কেশসজ্জা শিল্পীকে আড়াই মাস সাসপেন্ড করা হয় এবং তার পরে কী ভাবে আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছিল তাঁর। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “তাঁর সাসপেনশন-এর মেয়াদ শেষ হয়, কিন্তু, এরপর আসে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা। ওঁর গিল্ড ওঁকে জানায় তিনি কাজ করতে পারবেন ঠিকই। কিন্তু শুধু তাঁদেরই বলে দেওয়া কাজে তিনি যোগদান করতে পারবেন। নিজের ইচ্ছানুযায়ী কাজ নিতে পারবেন না এবং যদি এর পর ফেডারেশনের কর্মপদ্ধতি বা গিল্ডের নিয়ম কানুন নিয়ে কোনও সমালোচনামূলক মন্তব্য বা আলোচনা করেন, তবে আরও কড়া পদক্ষেপ করা হবে।”

    কেশসজ্জা শিল্পী তাঁর সুইসাইড নোটে কয়েক জনকে দায়ী করেছেন। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই সিনে ভিডিয়োর কেশসজ্জা শিল্পী অ্যাসোসিয়েশন-এর পদাধিকারী। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা, ইন্ডাস্ট্রির মানুষেরা সকলেই জানি, ফেডারেশনের আওতায় এই ২৬ টি আলাদা গিল্ড আদতে পুতুল, ফেডারেশনের মূল কার্যকরী কমিটির অঙ্গুলিহেলনে ও চাপে তারা এই সমস্ত ভ্রান্ত, আইন বিরুদ্ধ, খাপ পঞ্চায়েতসুলভ অনৈতিক, নিষ্ঠুর সিদ্ধান্ত বলবৎ করতে বাধ্য হয়ে থাকেন।”

    ফেডারেশনের উদ্দেশে বিবৃতিতে লেখা হয়, “এদের এই তুঘলকি কাজের কায়দা যে সম্পূর্ণ বেআইনি, তা প্রমাণ করতে কোনও গোয়েন্দা সংস্থা লাগবে না। যে কোনও উকিলকে তাঁর চেম্বারের দরজা থেকে জিজ্ঞেস করলেই তিনি বলে দেবেন। এ সব সত্ত্বেও এতজন কলাকুশলী এ সব মেনে নিয়ে চলেন কেন!! চিরকালীন সহজ সত্য। দিন মজুরিতে যারা কাজ করেন, তাঁদের নিরাপত্তাহীনতায় ধুয়ো দিয়ে তাঁদের ভয় দেখানো ও ভোলানো। তাঁদের কাছে ঈশ্বর হয়ে ওঠা। এই জিনিস চলতে চলতে আজ আমাদের সহকর্মী একেবারে মৃত্যুর চৌকাঠ অবধি পৌঁছে গিয়েছেন।”

    ফেডারেশনের নিয়মেও বদল আনার কথা বলা হয়েছে। সেই বিবৃতিতে বলা হচ্ছে, “যাদের সিদ্ধান্তে এই ঘটনা ঘটল, সত্ত্বর তাদের অপসারণ আমরা চাই। চাই, সমস্ত বেআইনি নিয়ম বাতিল হোক।” বিবৃতির শেষে হুঁশিয়ারি দিয়ে লেখা, “এই বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলার সময় এসেছে। নতুন বৃক্ষরোপণের সময় এসেছে। সকলে হাত বাড়ান।”

    পরমব্রত এই বিবৃতি শেয়ার করে সকলকে পড়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। বিবৃতি ভাগ করেছেন ঋত্বিক চক্রবর্তী, পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ও।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)