• সন্দীপ-ঘনিষ্ঠ ৩ ডাক্তারকে ঘিরে ক্ষোভ আইএমএ-তেও
    এই সময় | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • এই সময়: আরজি করের ঘটনার রেশ দেখা গেল এ বার ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-এর নিজস্ব বৈঠকেও। রবিবার পার্ক সার্কাসের আইএমএ হাউসে ছিল সংগঠনের রাজ্য শাখার আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতি বৈঠক। সেখানেই ধুন্ধুমার পরিস্থিতির সাক্ষী রইলেন সংগঠনের সদস্য চিকিৎসকরা। আরজি করের ঘটনায় নানা অনিয়ম ও অসঙ্গতি থাকার অভিযোগে বিদ্ধ তথাকথিত ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র ঘনিষ্ঠ তিন চিকিৎসককে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিয়ে এ দিন বের করে দেওয়া হয়।তাঁদের অভিযোগের তির আইএমএ-র রাজ্য সম্পাদক তথা রাজ্যসভায় তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেনের ঘনিষ্ঠ সদস্যদের দিকে। শান্তনু অবশ্য বিষয়টিকে ‘জনরোষ’ হিসেবেই দেখছেন। তিনি জানান, সক্রিয় রাজনীতি করেন বলে তিনি আগামী দিনে সম্পাদক পদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

    এ দিনের বৈঠকে অবশ্য ফের আগামী কমিটির সম্পাদক পদে প্রার্থী হিসেবে শান্তনুর নাম প্রস্তাব করেন সদস্যদের একাংশ। কিন্তু শান্তনু নিজে সরে আসেন। তিনি বলেন, ‘ফের নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নতুন নির্বাচিত কমিটি ২০২৫-২৭ পর্যন্ত সংগঠন পরিচালনা করবে। আমি মনে করি, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রত্যক্ষ ভাবে রাজনীতিতে যুক্ত কোনও ব্যক্তির সম্পাদক হওয়া উচিত নয়। তাই আর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না। তবে সংগঠনের প্রয়োজনে নিশ্চয়ই পরামর্শ দেবো।’

    তবে এ দিনের বৈঠক শুরুর আগেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। উত্তরবঙ্গ লবি এবং আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তিন চিকিৎসক তাপস চক্রবর্তী, জয়া মজুমদার ও প্রিয়াঙ্কা রানাকে ঘিরে অনেক চিকিৎসক বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। আইএমএ-এর রাজ্য শাখার আসন্ন নির্বাচনে কারা কারা মনোনয়ন জমা দেবেন, তা নির্ধারণ করতেই এ দিন বৈঠক ডাকা হয়েছিল।

    গত ৯ অগস্ট মর্মান্তিক ঘটনার দিন আরজি করের ক্রাইম সিনে দেখা গিয়েছিল সুদীপ্ত রায়, সুশান্ত রায়, বিরূপাক্ষ বিশ্বাস, অভীকে দে এবং আরও কয়েক জনের সঙ্গে তাপস চক্রবর্তীকেও। তাঁদের বিরুদ্ধে পরে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ তোলেন জুনিয়র ডাক্তারদের একটা বড় অংশ। কয়েক দিন আগেই এই অভিযোগে আইএমএ-র মালদা শাখার সভাপতির পদ থেকে অপসারণ করা হয় তাপসকে।

    আর এ দিন রাজ্য শাখার বৈঠকে তাঁকে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। একই ঘটনা ঘটে কল্যাণীর গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসক জয়া মজুমদার এবং বিরূপাক্ষের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত প্রিয়াঙ্কা রানার ক্ষেত্রেও। যদিও তাপস বলেন, ‘আমি আগেও বহু বার বলেছি, সুদীপ্ত রায়, সুশান্ত রায়, সুহৃতা পালদের সঙ্গে আমি গিয়েছিলাম আরজি করে ঠিকই। কিন্তু কোনও অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে যাইনি।’

    প্রিয়াঙ্কার বক্তব্য, ‘৯ তারিখ আমি শহরের বাইরে ছিলাম। আরজি করে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’ কিন্তু তাঁরা তিন জনেই অভিযোগ তুলেছেন, পরিকল্পিত ভাবে আইএমএ রাজ্য শাখার সদস্যদের একাংশ তাঁদের অকারণে হেনস্থা করার জন্যই এমন আচরণ করেছেন। যদিও সে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিক্ষুব্ধ চিকিৎসকরা। তাঁরা বলেন, ‘যে জঘন্য ঘটনার সঙ্গে নাম জড়িয়েছে ওই তিনজনের, তাতে যতদিন না ওঁরা কলঙ্কমুক্ত হচ্ছেন, ততদিন ওঁদের বয়কটই করা হবে।’
  • Link to this news (এই সময়)