• ‘অভীক সিন্ডিকেটের’ চার ডাক্তার এবার শাস্তির মুখে
    বর্তমান | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: অভীক দে’র সিন্ডিকেটে থাকা চারজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে স্বাস্থ্যদপ্তর। তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রী অভিযোগ করেছেন। ওই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর জন্য ড্রপবক্স বসানো হয়েছিল। সেখানে পড়ুয়ারা লিখিতভাবে উত্তরবঙ্গ সিন্ডিকেটের অনেকের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ওই চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। এক ছাত্রী লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁকে ঘুরতে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। এই অফার মানলে অনার্স পাইয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন। অফার না মানার কারণে হুমকি দেওয়া হয়। আর এক ছাত্রী অভিযোগ করেছেন, চারজন চিকিৎসক প্রায়শই মদ্যপানের আসরে ডাকতেন। সেখানে গেলে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার টোপ দেওয়া হতো। আর তা না মানলেই বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করা হতো। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্ত অভিযোগ স্বাস্থ্যদপ্তরে জানানো হয়েছে। অনেক অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে। তাঁদেরকে সাসপেন্ড করা হতে পারে। ওই চার চিকিৎসকের কলেজে ঢোকার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা কলেজে ঢুকতে পারবেন না বলে সাফ জানানো হয়েছে। এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, ওই চারজনই অত্যন্ত বেপরোয়া ছিলেন। তাঁরা কোনওকিছুই তোয়াক্কা করতেন না। রাতে নিজেরাই গেস্টহাউস খুলে পার্টি করতেন। সেখানে তাঁদের পছন্দমতো পড়ুয়াদের ডাক পড়ত। ইচ্ছে না থাকলেও অনেকেই সেখানে হাজির থাকতে বাধ্য হতেন। তাঁদের উপর অভীক দে’র হাত থাকার কারণেই এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন। অভীকের বিরুদ্ধে চিকিৎসক সংগঠন একাধিক অভিযোগ সিবিআইয়ের কাছে জমা করেছে। তাঁর এমএসে সুযোগ পাওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। চিকিৎসক সংগঠনের পক্ষে সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, উনি ভুল নথি দিয়ে এমএস করছেন সেই তথ্য আমরা সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছি। এছাড়া আরও একাধিক অভিযোগ তথ্য সহ জমা করা হয়েছে। যদিও সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্নীতি মামলায় এখনও অভীককে জেরা করা হয়নি। অভয়াকে ধর্ষণ ও খুনের দিন তিনি আরজি করে হাজির ছিলেন। সেই ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন জায়গায় দেখা গিয়েছে। ওইদিন তিনি কী কারণে আরজি করে হাজির ছিলেন সেটা জানতেই তাকে টানা দু’দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অভীকের পাশাপাশি তার চার সঙ্গীও বেকায়দায় পড়তে চলেছেন। 


    বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সমস্ত অভিযোগ তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখছে। আর এক আধিকারিক বলেন, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত নন এমন একজন চিকিৎসকও প্রায়শই এসে পার্টি করতেন। তাঁর নামে অভিযোগ জমা পড়েছে। বিষয়টি স্বাস্থ্যদপ্তরকে জানানো হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)