মানকরে পালবাড়ির পুজোয় দুর্গাকে ভোগে নিবেদন করা হয় বড়ি-পোস্ত
বর্তমান | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, মানকর: পুজোর সূচনা হয়েছিল প্রায় ৩০০ বছর আগে। ঐতিহ্য আর পরম্পরা মেনে পূর্ব বর্ধমানের মানকরের পালবাড়িতে পুজোর আয়োজন করছেন বর্তমান সদস্যরা। সকলেই মেনে চলেন পুজোর রীতি। এখানে পুজোর বিশেষ নিয়ম হল পূজারীকে এক আসনে বসেই অষ্টমী পূজো, সন্ধিপুজো, নবমী পুজো ও ভোগ নিবেদন সম্পূর্ণ করতে হবে। পূজারী আসন ছেড়ে উঠতে পারবেন না। কীভাবে এই পুজো শুরু হল, তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। অনেকে বলেন, এই বংশের পূর্বপুরুষ দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুজো শুরু করেছিলেন। অন্যমতে, পাল পরিবারের আদি বসবাস ছিল বর্ধমান সদরের কাঞ্চননগর এলাকায়। তখন দামোদরের বন্যার হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য মানকরে এসে তাঁরা বসবাস স্থাপন করেন। নিজেদের বংশের শ্রীবৃদ্ধির জন্য পুজোর আয়োজন করেন।
বর্তমানে পালবাড়ির ১২ শরিক। পরিবারের সদস্য তুষার পাল, সমর পাল বলেন, অষ্টমীর দিন দেবীকে ৫২ সের চালের নৈবেদ্য নিবেদন করতে হয়। অন্যদিন ১৫ সের করে চাল নিবেদন করতে হয়। ভোগে দেবীকে নানা ব্যঞ্জন দেওয়া হলেও বড়ি-পোস্ত অবশ্যই দিতে হবে। বলি প্রথা রয়েছে পুজোয়। তবে সপ্তমীর দিন যে বলি হয়, তা পাল পরিবারের সদস্যরা গ্রহণ করেন না। অষ্টমীর দিন কালো ছাগ বলি দিতে হয়। পুরোহিত জগবন্ধু চক্রবর্তী টানা ৬৩ বছর ধরে এই পুজো করছেন। পরিবারের সদস্যরা অনেকে কাজের সূত্রের বাইরে থাকলেও পুজোর দিনগুলিতে নবীন ও প্রবীণ সমস্ত প্রজন্মই পুজোয় অংশগ্রহণ করে।
মানকর স্টেশন বাজার সংলগ্ন সর্বজনীন দুর্গাপুজো দেখতে বহু মানুষ ভিড় করেন। মানকর পোস্ট অফিসের পোস্টমাস্টার আনারুল হক এবং সাব রেজেস্ট্রি অফিসের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী লক্ষ্মীনারায়ণ পরামাণিক এই পুজোর সূচনা করেন। বর্তমান পুজো উদ্যোক্তা তপনকুমার বিশ্বাস, মহাদেব ঘোষরা বলেন, আমাদের পুজো সম্প্রীতির। পঞ্জিকার নির্ঘণ্ট মেনে ষষ্ঠী থেকে পুজো শুরু হয়। আগে নরনারায়ণ সেবা হলেও করোনার সময় থেকে তা বন্ধ রয়েছে। তবে অষ্টমীর দিন প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা থাকে। -নিজস্ব চিত্র