• রামনগরের ঘোষবাড়ির পুজোর দায়িত্বে অরবিন্দ ও গিরিশ ঘোষের উত্তরসূরিরা
    বর্তমান | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বারুইপুর: ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহ হয়েছিল। আনুমানিক তারও  ৩৫০ বছর আগে খড়ের ছাউনি দেওয়া মাটির দালানে দুর্গাপুজোর সূচনা করেছিলেন বারুইপুরের রামনগরের পুরনো ঘোষবাড়ির মহেশ ঘোষ। ঘোষ পরিবারের সদস্যদের দাবি, এই মহেশ ঘোষ ছিলেন বিপ্লবী ঋষি অরবিন্দ ঘোষ ও নাট্যকার গিরিশ ঘোষের পূর্বসূরি। তখন থেকেই বংশ পরম্পরায় ঘোষবাড়ির দুর্গাদালানে ঘটা করে দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। কথিত আছে, পুজোর সময় দু’টি লক্ষ্মীপ্যাঁচা আসত। গোটা পুজোর সময়টা খড়ের ছাউনির ওই দালানের ঈশান কোণে বসে থাকত তারা। এছাড়া রামনগরের এই অঞ্চল একদা সুন্দরবনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ঘন জঙ্গলে ঢাকা ছিল গোটা এলাকা। পরিবারে জনশ্রুতি আছে, এক রয়েল বেঙ্গল টাইগার নাকি পুজারি ব্রাহ্মণকে তুলে নিয়ে চলে গিয়েছিল।


    ঘোষবাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, দুর্গাদালানে একচালার দুর্গাপ্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। এই পুজোকে ঘিরে গ্রামে সাজসাজ রব পড়ে যায়। দূরদূরান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা পরিবারের সদস্যরা সবাই পুজোর সময় সমবেত হন। পুজোর সময় মাকে নতুন সোনার গয়নায়, শাড়িতে সাজিয়ে তোলা হয়। পরিবারের সদস্য পার্থ ঘোষ বলেন, আগে পুজোয় বলি প্রথা চালু ছিল। কিন্তু তা এখন বন্ধ। সপ্তমী, অষ্টমী, নবমীতে চালকুমড়ো, আখ ইত্যাদি বলি দেওয়া হয়।


    পরিবারেরই সদস্য শিবাজি ঘোষ, পল্লবী ঘোষরা বলেন, আমাদের বংশ তালিকায় জ্বলজ্বল করছে ঋষি অরবিন্দ ও গিরিশ ঘোষের নাম। তাঁদের উত্তরসূরি হিসেবে গর্বিত আমরা। আর আমাদের পুজো খুবই নিয়মরীতি মেনে হয়। একদা খড়ের ছাউনির দালান সংস্কার করে এখন নতুন করে দুর্গাদালান করা হয়েছে। আমাদের এখানে মা দুর্গার দাসী হিসেবে ডানদিকে জয়া ও বাঁদিয়ে বিজয়া থাকেন। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত খিচুড়ি, লুচিভোগ খাওয়ানো হয়। আর দশমীর দিন চিঁড়েভোগ দেওয়া হয়। আর এক সদস্য অয়ন মিত্র বলেন, বিসর্জনের দিন প্রতিমাকে কাঁধে করে শোভাযাত্রা সহকারে রামনগর বাজার সংলগ্ন পঞ্চানন মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপরে তা বাড়ির পুকুরে বিসর্জন করা হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)