• বিক্ষোভে ঢুকতেই পারলেন না ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র সদস্যেরা
    আনন্দবাজার | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) জলপাইগুড়ি শাখা ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাবে সিলমোহর দিল সংগঠনের রাজ্য শাখা। রবিবার কলকাতায় আইএমএ-র রাজ্য কাউন্সিলের বৈঠকে শুরু থেকেই আর জি কর-কাণ্ডের জেরে বিতর্কিত ‘উত্তরবঙ্গ লবি’কে কোণঠাসা করে রাখা হয় বলে খবর। চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র সদস্যদের ‘খাপ থেকে তলোয়ার’ বার করার ন্যূনতম সুযোগটুকু দেওয়া হয়নি।

    এ দিন বৈঠকের শুরুতেই ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র অন্যতম ‘সদস্য’ বলে পরিচিত তাপস চক্রবর্তী-সহ তিন জনকে বৈঠকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। আর জি করে ঘটনার দিন জলপাইগুড়ির চক্ষু চিকিৎসক সুশান্ত রায়ের সঙ্গে তাপস চক্রবর্তীও ওই হাসপাতালে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এ দিন বৈঠকে ওই তিন চিকিৎসকের কেউই ঢুকতে পারেননি। বৈঠকে আইএমএ-র কলকাতা শাখার সদস্য অসীম সরকার ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র সদস্য বিরূপাক্ষ বিশ্বাস, অভীক দে-দের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়ার কথা বলায় বিক্ষোভ শুরু হয়। সূত্রের দাবি, বিক্ষোভের জেরে অসীম তাঁর বক্তৃতা মাঝপথে থামিয়ে দেন। এ দিন আইএমএ-র রাজ্য কাউন্সিল শাখার সিদ্ধান্ত, সংগঠনের জলপাইগুড়ি শাখা ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাবকে সমর্থন করে কেন্দ্রীয় শাখাকে পাঠানো হবে। ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র ‘মগজ’ বলে পরিচিত সুশান্ত রায়, অভীক দে এবং বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে সংগঠনের সদস্যপদ থেকে বরখাস্ত করা হবে।

    কলকাতায় আইএমএ-র বৈঠকে যোগ দিতে জলপাইগুড়ি থেকে গিয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক চিকিৎসক প্রদীপকুমার বর্মা, কমলেশ বিশ্বাস এবং রাহুল ভৌমিক। প্রদীপ এবং কমলেশ সভায় বক্তব্য রাখেন। বিধায়ক প্রদীপ বলেন, “যে ভাবে আইএমএ-র জলপাইগুড়ি শাখা দখল করা হয়েছিল সে সব খুলে বলেছি। রাজ্য শাখা জলপাইগুড়ির আইএমএ-র ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রস্তাব করে গ্রহণ করেছেন।” কমলেশ বলেন, “জলপাইগুড়ি আইএমএ ছিল হুমকি সংস্কৃতির আঁতুরঘর। সে সব রাজ্য শাখায় বলেছি।”

    যাঁদের ঘিরে এ দিন বৈঠকের আগে বিক্ষোভ হয় তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আইএমএ-মালদহ শাখার সভাপতি তাপস চক্রবর্তী, যাঁকে সম্প্রতি আর জি কর কাণ্ডের পরে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছিল। আর জি কর কাণ্ডের পরে ঘটনাস্থলে তাঁর যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। রয়েছেন প্রিয়াঙ্কা রানা, যিনি স্বাস্থ্য দফতরে ‘এটনামোলজিস্ট’ এবং শিলিগুড়ি এক প্রবীণ চিকিৎসকের মেয়ে। অভিযোগ, ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র এক অন্যতম ‘মাথা’র ঘনিষ্ঠ বলে তিনি পরিচিত। অপর জন হলেন কল্যাণীর জয়া মজুমদার। এঁরা বৈঠকে ঢুকতে গিয়ে চিকিৎসকদের প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়েন। আইএমএ’র সম্পাদক শান্তনু সেন হাত জোড় করে জানান, কিছু ঘটে গেলে তার দায় নিতে পারবেন না। বৈঠকে ঢোকার মুখে তাঁদের ঘিরে ‘গো ব্যাক স্লোগান’ও দেওয়া হয়।

    রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সহ সভাপতি সুশান্ত রায়ের মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হলে তাঁর চিকিৎসক-পুত্র সৌত্রিক বলেন, ‘‘জলপাইগুড়ি থেকে যাঁরা গিয়েছিলেন তাঁদের একাংশ আইএমএ’র সদস্য নন। অথচ যাঁরা সদস্য তাঁদের কয়েকজনকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। বিক্ষোভ দেখানো হল। শুনেছি, এ নিয়ে ওই চিকিৎসকেরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাই হুমকি সংস্কৃতি কারা করছে সেটা মানুষ দেখুক।’’

    এ দিন কলকাতায় বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছিলেন আইএমএ’র শিলিগুড়ি শাখার সম্পাদক শঙ্খ সেন-সহ আরও চার জন। শঙ্খ বলেন, ‘‘বৈঠকের শুরুতে কয়েকজন সদস্যের উপস্থিতি নিয়ে কিছু সমস্যা হয়েছে। ’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)