প্রায় ন’মাসের প্রতীক্ষার অবসান। অবশেষে সরকারি ক্ষতিপূরণ বাবদ ১২ লক্ষ টাকা পেলেন অ্যাসিড হানার শিকার রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের ছ’নম্বর ব্যাটেলিয়নের কনস্টেবল সুমিত হালদার। গত ১৭ ডিসেম্বর হুগলির হরিপালে নিজের বাড়িতে অ্যাসিড হানার শিকার হন সুমিত। তাঁর বৌদি অনুরাধা হালদারই প্রধান অভিযুক্ত বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে তিনি অন্তঃসত্ত্বা বলে এখন জামিনে। বাঁ চোখের দৃষ্টি খুইয়েও সম্প্রতি তাঁর চাকরিতে যোগ দিয়েছেন সুমিত।
তবে দেরিতে ক্ষতিপূরণ পেলেও এই ঘটনাটিতেও রাজ্যে অ্যাসিড হানার ঘটনায় সর্বোচ্চ আদালত নির্দেশিত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর (এসওপি) বা আদর্শ কার্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে না-বলে অভিযোগ। নিয়ম অনুযায়ী, কেউ অ্যাসিড আক্রান্ত হলে ১৫ দিনের মধ্যে প্রাথমিক সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে এক লক্ষ টাকা আসবে। কিন্তু সুমিতের ক্ষেত্রে আবেদনটুকুই করা হয়নি। তা ছাড়া, সর্বোচ্চ আদালতও অ্যাসিড হামলায় রাজ্যকে যত দূর সম্ভব কম করে তিন লক্ষ টাকা সাহায্য দিতে বলেছে। সুমিত নিজে এক জন পুলিশকর্মী। কিন্তু তাঁর ক্ষেত্রেই তদন্ত এবং ক্ষতিপূরণ প্রক্রিয়ায় টালবাহানার ছবিটাই উঠে আসছে।
গত মার্চে হুগলি জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ বা ডিএলএসএ সুমিতের অবস্থা খতিয়ে দেখে ১২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ধার্য করে। রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ বা এসএলএসএ-র ছাড়পত্র মাফিক এত দিনে সেই টাকা এসেছে। তবে গোড়া থেকেই সুমিতের পাশে দাঁড়িয়েছে অ্যাসিড আক্রান্তদের একটি সর্বভারতীয় মঞ্চ ব্রেভ সোলস ফাউন্ডেশন। তাঁদের তরফে অপরাজিতা গঙ্গাপাধ্যায় বলেন, “ক্ষতিপূরণের টাকাটুকু এত দেরিতে পাওয়া অভিপ্রেত ছিল না। যা পাওয়া গিয়েছে, তা যথেষ্টও বলা যায় না। হাই কোর্টে এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের লড়াই চলবে।” ওই মঞ্চটির তরফে তরুণ আইনজীবী দিব্যায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলি ডিএলএসএ-র কাছে সুমিতের পরিস্থিতি মেলে ধরেছিলেন।