সব ইচ্ছা যেন এক নিমিষে শেষ করে দিয়েছে সমুদ্র। গভীর সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরে ফেরার পথে ঝোড়ো হওয়ার কবলে পড়ে ডুবে যায় বাবা গোবিন্দ নামের ট্রলারটি। সেই ট্রলারে ১৭ জন মৎস্যজীবীর মধ্যেই একজন ছিল সৌরভ। সৌরভ-ই ছিল সবথেকে ছোট। গভীর সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরার আগে কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না সৌরভের। এই প্রথম সে সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। আর এটাই হয়ে যায় তার প্রথম ও শেষ ইলিশ মাছ ধরা। বাড়ি ফেরা হল না সৌরভের। কান্নায় ভেঙে পড়েছে সৌরভের গোটা পরিবার। বাবাও কেরালায় মাছ ধরার কাজ করেন। বাবার সঙ্গে সৌরভও কেরালায় বেশ কিছুদিন রাজমিস্ত্রির কাজ করেছিল। কিন্তু তেমন রোজগার হচ্ছিল না। তাই কাকদ্বীপের মাইতি চকে নিজের বাড়িতে ফিরে আসে।
এরপর বুধবার দিন কাকদ্বীপের ঘাট থেকে ট্রলারে করে গভীর সমুদ্রে প্রথমবার মাছ ধরতে বের হয় সৌরভ। আর শুক্রবার-ই ভোর ২টো নাগাদ হঠাৎই ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি। ডুবে যায় ট্রলারটি। ট্রলার মধ্যেই তখন ঘুমাচ্ছিল সৌরভ। সমুদ্রে মাছ ধরার অভিজ্ঞতা না থাকায়, দুর্ঘটনার কবলে পড়ে কী করবে বুঝতে পারেনি সৌরভ। কেবিনের ভিতর থেকে বেরোতেও পারেনি সে। বুঝে ওঠার আগেই ডুবে যায় ট্রলার। ট্রলার যখন উদ্ধার হয়, তখন কেবিনের মধ্যেই আটকে ছিল সৌরভের নিথর দেহটা। বাড়ির বড় ছেলের মৃত্যুতে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছে বাবা-মা। কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবারের লোকজন। শোকস্তব্ধ কাকদ্বীপের গোটা মাইতি চক গ্রামে। ইতিমধ্যেই মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা ও মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ বাপি হালদার। দেখা করে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্যের চেক তুলে দেন তাঁরা।