আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার রেশ এখনও কেউ ভুলতে পারেননি। ওখানে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল। যার জেরে তুমুল আন্দোলন হয়েছিল রাজ্য জুড়ে। সদ্য উঠেছে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি। আর এই আবহের মধ্যেই এবার পানিহাটির তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক নির্মল ঘোষকে তলব করল সিবিআই। আজ, সোমবার সকালে বিধায়ক সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হন। যদিও এড়িয়ে গিয়েছেন সাংবাদিকদের প্রশ্ন। তবে বিধায়ক শুধু জানান, তাঁর নিজের কিছু কাজ আছে। তাই নথি জমা দিতে এসেছেন। তিনিই সিবিআইয়ের কাছে সময় চেয়েছিলেন। মৃতা তরুণী চিকিৎসকের বাড়ি তাঁরই বিধানসভা এলাকায়। তাই বিধায়ককে তলব বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
এদিকে আইএমএ’র কলকাতা শাখার সহ–সভাপতি পদত্যাগ করতেই আলোড়ন পড়ে যায়। তার মধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়কের সিবিআই দফতরে উপস্থিতি নানা গুঞ্জন তৈরি করেছে। গত ৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে নির্যাতিতার মৃতদেহ পানিহাটির বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তখন মৃতদেহ সৎকার করা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল স্থানীয় এই বিধায়ককে। সেই ছবি ও তথ্য আগেই সিবিআইয়ের হাতে এসেছিল। কিন্তু কেন দেহ সৎকারে বিধায়ক নির্মল ঘোষের এত তৎপরতা? কার নির্দেশে তা করেছিলেন? এইসব প্রশ্নের এখন উত্তর জানতে চায় সিবিআই।
অন্যদিকে রবিবারই কলকাতা আইএমএ শাখার বৈঠক উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। সেখানে দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল বচসা হয়েছিল। ইস্যু কিন্তু সেই আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা এবং নিষ্ক্রিয় ভূমিকা। এই ঘটনার পর তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ককে সিবিআই তলব অন্য মাত্রা যোগ করেছে। এই ঘটনা নিয়ে বারবার ঘোলা থানার আইসিকে তলব করা হয়। যদিও তিনি অনুপস্থিত থেকে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হননি। তবে সেদিনের ভিডিয়ো ফুটেজে শ্মশানের ছবি দেখেন সিবিআই অফিসাররা। তার পরই নির্মল ঘোষকে তলব করা হল সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে।
আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষও আইএমএ’র কলকাতা শাখার সদস্য ছিলেন। এখন তাঁকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তারপর সন্দীপকে পদ থেকে সরিয়ে দেয় আইএমএ কলকাতা। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গেই বিধায়ক নির্মল ঘোষ হাসপাতালে গিয়েছিলেন। আদালতের নির্দেশে এই মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। এবার সিবিআই বিধায়কের বয়ান রেকর্ড করছে বলে সূত্রের খবর। গ্রেফতার করা হয়েছে টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকেও। এই মামলায় চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাস, অভীক দে, টালা থানার ওসিকে সিজিওতে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন গোয়েন্দারা। নির্যাতিতার ময়নাতদন্ত করেছিলেন যে চিকিৎসক, সেই অপূর্ব বিশ্বাস জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এবার নির্মলকে ঘোষকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।