শারদোৎসবের ঠিক আগেই রাজ্য জুড়ে বন্য়া পরিস্থিতি। এই প্রেক্ষাপটে কেন্দ্র বনাম রাজ্যের সংঘাত চলছে তো চলছেই। এরই মধ্যে রাজ্যের বন্যা কবলিত এলাকাগুলি পরিদর্শন করতে বেরিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার পূর্ব বর্ধমানে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে একটি পর্যালোচনা বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। তারই মাঝে এদিনও ফের একবার রাজ্যের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতির জন্য ডিভিসি কর্তৃপক্ষ তথা কেন্দ্রীয় সরকারকেই নিশানা করেন তিনি।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচারিত খবরে প্রকাশ, রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, আসলে নিজেদের বাঁচাতেই বাঁধের জল ছেড়ে দেয় ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। যার খেসারত দিতে সারা বাংলার মানুষকে।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, যখনই ঝাড়খণ্ডে বেশি বৃষ্টি হয়, ডিভিসি জল ছাড়তে শুরু করে। নিজেদের বাঁচাতেই এমনটা করে তারা। আর যেহেতু ডিভিসি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্ত একটি সংস্থা, তাই সরাসরি এই প্লাবনের জন্য কেন্দ্রকেই দায়ী করেছেন মমতা।
তবে, রাজ্য যতই কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুলুক, মোদী সরকার এই ইস্যুতে কোনও দায় নিতে নারাজ। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্র ও রাজ্য, দুই পক্ষের মধ্য়ে চিঠি চালাচালি চলছে। রাজ্যের অভিযোগ, ডিভিসি অবিবেচকের মতো জল ছাড়াতেই বাংলা জুড়ে বিপর্যয় নেমে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী যে কারণে এই বন্যা পরিস্থিতিকে 'ম্যান মেড বন্যা' বলে অবিহিত করেছেন।
তাঁর অভিযোগ, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় সরকার যে পরিমাণ টাকা খরচ করে, তার সামান্য অংশও যদি এখন রাজ্যকে দিত, তাহলে বাংলার সরকার এই পরিস্থিতি সামলে নিত।
পালটা কেন্দ্রের দাবি, ডিভিসি যে জল ছাড়বে সেই তথ্য় আগে থেকেই জানত রাজ্য সরকার। তাই এখন কেন্দ্রের উপর দায় চাপালে চলবে না।
উলটো দিকে, রাজ্য প্রশাসনের বক্তব্য, কেন্দ্রের এই দাবি একেবারেই সঠিক নয়। কারণ, জল ছাড়ার সময় বরাবরই ডিভিসি কর্তৃপক্ষ একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে এসেছে। কখনও রাজ্য সরকারের সঙ্গে আগাম আলোচনায় বসেনি তারা।
এদিকে, সোমবারের বৈঠক প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় তাঁর এক্স হ্য়ান্ডেলে বেশ কিছু ছবি পোস্ট করেন। ক্যাপশনে লেখেন, 'পূর্ব বর্ধমানের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আজ আমি প্রশাসনিক স্তরে একটি পর্যালোচনা বৈঠক করেছি।
সংশ্লিষ্ট সমস্ত সরকারি আধিকারিককে আমি নির্দেশ দিয়েছি, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করতে তাঁরা যেন নিজেরাই ময়দানে নামেন এবং আক্রান্তদের দুর্দশা দূর করতে যা যা পদক্ষেপ করার, তা যেন অবিলম্বে করেন।'