• বন্যায় ফসলে ক্ষতি মিলবে বিমার টাকা
    বর্তমান | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সুখেন্দু পাল, বর্ধমান: টানা বৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে পূর্ব বর্ধমান, হুগলি ও দু‌ই মেদিনীপুরের বহু ধানজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টানা কয়েকদিন ধরে জল জমে যাওয়ায় ধান গাছে পচন ধরেছে। চিন্তায় চাষিদের রাতের ঘুম চলে গিয়েছে। সোমবার রাজ্যের শস্যগোলা বর্ধমানে দাঁড়িয়ে চাষিদের আশ্বস্ত করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, জলে যাঁদের জমির ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছে তাঁরা বিমার টাকা পাবেন। তাঁদের চিন্তার কারণ নেই। বাংলার মতো বন্যা অন্য কোথাও হয় না। প্রতি বছর ফসলের ক্ষতি হয়। চাষিদের বিনামূল্যে বিমা করিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের টাকা পেতে সমস্যা হবে না।


    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানের রায়না-২ ব্লকে সবচেয়ে বেশি ধানজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া গলসি, জামালপুর সহ কালনা মহকুমা এলাকাতেও বেশকিছু জমির ক্ষতি হয়েছে। জেলা প্রশাসন সেই রিপোর্ট তৈরি করে রেখেছে। এদিন বর্ধমানে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে একাধিক বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদের কাছে জানতে চান। এদিনের বৈঠকে জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামপ্রসন্ন লোহার, বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, খোকন দাস সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা যোগ দেন। জামালপুর, গলসি এবং রায়না-২ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতিরা উপস্থিত ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলে হুগলি, হাওড়া, বাঁকুড়া, বীরভূম সহ কয়েকটি জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিহারেও জল ঢোকে। সেই রাজ্যও বাঁধ কেটে বাংলায় জল ঢুকিয়ে দেয়। চাষের জমি প্লাবিত হওয়ায় ধান নষ্ট হচ্ছে।


    রাজ্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বনির্ভর হচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন। তিনি বলেন, বাংলায় আগে পেঁয়াজ চাষ হতো না। এখন বাংলার অনেক জেলায় পেঁয়াজ চাষ হয়। ডিসেম্বর মাসে আমাদের রাজ্য ডিম উৎপাদনে স্বনির্ভর হবে। মাছ চাষেও আমরা অনেকটা এগিয়ে গিয়েছি।


    কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্যায় ধানজমির পাশাপাশি সব্জি চাষও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনও জল জমে থাকায় বিঘার পর বিঘা সব্জির জমি পচে গিয়েছে। তাঁরাও চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন। সব্জি চাষের ধাক্কা চাষিরা সামলে নিতে পারেন। কিন্তু ধানজমি ক্ষতিগ্রস্ত হলে চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে যায়। ধাক্কা সামাল দিতে নাজেহাল হতে হয় বলে চাষিরা জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে স্বর্ণধান বেশি চাষ হচ্ছে। আধিকারিকরা মঠে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত চাষের জমি চিহ্নিত করবেন। তাঁরা যাতে দ্রুত বিমার টাকা পান তার ব্যবস্থা করা হবে। 


    কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে মৌজা ধরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা চিহ্নিত করা হতো। নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, কোনও মৌজায় একজন চাষির জমি ক্ষতিগ্রস্ত হলে তিনি বিমার টাকা পাবেন। স্যাটেলাইটের পাশাপাশি আধিকারিকরা সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জমি চিহ্নিত করবেন। এবার অতিবৃষ্টিতে আলু চাষও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বিমা থকায় শুধু পূর্ব বর্ধমানের চাষিরা প্রায় ১০০ কোটি টাকা পেয়েছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)