• রুবি মোড়ে অপহৃত বিস্কুট সংস্থার মালিক, ২০ লক্ষ মুক্তিপণ দাবি, উদ্ধার কালিয়াচক থেকে
    বর্তমান | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কলকাতা থেকে অপহরণ করা হল ধনেখালির একটি বিস্কুট প্রস্ততকারী সংস্থার মালিককে! রবিবার সকাল আটটা নাগাদ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে রুবি মোড়ের একটি নামী হোটেলের সামনে। অপহৃত ব্যবসায়ীর নাম অনির্বাণ হাজরা। বছর ৫০-এর ব্যবসায়ী গরফার রুচিরা আবাসনের বাসিন্দা। অপহরণকারী দলটি ২০ লক্ষ মুক্তিপণ চেয়ে ফোন করে ব্যবসায়ীর স্ত্রী’কে। পরে ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা হয়। অপহৃত ব্যবসায়ীর স্ত্রী প্রথমে অভিযোগ জানান স্থানীয় গরফা থানায়। এরপরই অপহরণের মামলা দায়ের করে একযোগে তদন্তে নামে গরফা, কসবা এবং লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখার গোয়েন্দারা।  তদন্তে  নেমে অপহৃত ব্যবসায়ী ও তাঁর পার্টনারের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন,  কল ডিটেলস রিপোর্ট সংগ্রহ করে পুলিস। এমনকী অপহৃতের সুরক্ষার স্বার্থে দু’জনের মোবাইলে আড়ি পাতা শুরু হয়। পাশাপাশি রুবির মোড়ের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং অপহরণে ব্যবহৃত এসইউভি গাড়ির নম্বর হাতে চলে আসে তদন্তকারী দলের। 


    এভাবেই সকাল থেকে নজরদারি চালাতে গিয়ে দুপুর দেড়টা নাগাদ, একটি মোবাইলের অবস্থান দেখায় ফরাক্কার কাছে। প্রথমে অপহৃতের মোবাইল সুইচ অফ ছিল। এরপরই হঠাৎ করে সেই মোবাইলের অবস্থান দেখায় ফরাক্কায়। তখন কলকাতা পুলিস নিশ্চিত হয়ে যান, অপহৃতকে মালদহের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিকেলের দিকে গরফা থানা এবং লালবাজারের গোয়েন্দাদের টিম মালদহের দিকে রওনা দেন। 


    ভোররাতে মালদহ পুলিসের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে মালদহের মোথাবাড়ি থানা এলাকার একটি গ্রাম থেকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় অপহৃত বিস্কুট কারখানার মালিককে। পাশাপাশি, ঘটনাস্থল থেকে  অপহৃত ব্যবসায়ীর পার্টনার সহ মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে কসবা থানা। অপহরণে ব্যবহৃত এসইউভি গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করেছে কলকাতা পুলিস। 


    কেন অপরহণ? প্রাথমিক তদন্তে কলকাতা পুলিস জানতে পেরেছে, অপহৃত  বিস্কুট সংস্থার মালিকের সঙ্গে তাঁর পার্টনারের টাকা পয়সা সংক্রান্ত বিবাদ চলছিল। রবিবার সকালে ওই পার্টনার ফোন করে রুবির মোড়ে ডেকে পাঠান। তবে পুলিস জানতে পেরেছে, প্রথমে অবশ্য রুচিরা আবাসনের সামনে দাঁড়াতে বলা হয়েছিল ব্যবসায়ীকে। কিন্তু একদম শেষ মহূর্তে স্থান পরিবর্তন করা হয়।   যদিও অপহরণের ঘটনায় বেশ কিছু অসঙ্গতি পেয়েছে পুলিস। প্রথমত, সাত সকালে রুবির মোড়ে কাউকে জোর করে গাড়িতে তোলা হলে, প্রত্যক্ষদর্শী থাকার কথা। কিন্তু এক্ষেত্রে তেমন কিছু নেই। দ্বিতীয়ত, পুলিস জেনেছে ফরাক্কায় হোটেলে গাড়ি থামিয়ে অপহৃত ও অপহরণকারী একসঙ্গে খাওয়া দাওয়া সারেন। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠছে, কেন অপহৃত চিৎকার করে সাহায্য চাইলেন না?  তৃতীয়ত, আগে থেকেই অপহরণের আশঙ্কা করছিলেন বিস্কুট কারখানার মালিক। কিন্তু কেন? তদন্তে এসব প্রশ্ন ভাবাচ্ছে তদন্তকারী দলকে। এদিকে, সোমবার দুপুরে উদ্ধার হওয়া ব্যবসায়ী সহ ধৃতদের নিয়ে কলকাতার দিকে রওনা দিয়েছেন কলকাতা পুলিস। ধৃতদের আজ মঙ্গলবার দুপুরে আলিপুর আদালতে তোলার কথা রয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)