• বিক্রি হবে বসুশ্রী হল? খবরে তুমুল শোরগোল
    এই সময় | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • এই সময়: বহু ইতিহাসের সাক্ষী ‘বসুশ্রী’ সিনেমা হলের মালিকানা হস্তান্তরের প্রস্তাবকে ঘিরে আশঙ্কার মেঘ বাংলার সিনেমা জগতে। পথের পাঁচালী-সহ বহু কালজয়ী ছবির প্রিমিয়ার হয়েছে হাজরা মোড়ের কাছে এই সিনেমা হলে। একটা সময় পর্যন্ত এখানে ফি বছর সঙ্গীত, যন্ত্রসঙ্গীত, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আসর বসত।সেই সূত্রে উদয়শঙ্কর, রবিশঙ্কর, মান্না দে, আল্লা রাখা, কিশোর কুমার, রাহুল দেব বর্মনের মতো খ্যাতনামা শিল্পীরা এসেছেন এই প্রেক্ষাগৃহে। কিন্তু আগের মতো দর্শক হচ্ছে না বলে লোকসানের মুখ দেখতে হচ্ছে মালিকদের। তাই, বসুশ্রীকে অন্য একটি বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিতে চাইছেন মালিকদের একাংশ। এ বার পুজোর আগেই যেখানে ২০ বছর আগে বন্ধ হওয়া ‘গ্লোব’ সিনেমা হলের নতুন চেহারায় প্রত্যাবর্তনের খবরে ছড়িয়েছে খুশির হাওয়া, সেখানে বসুশ্রীর হাত বদলের সম্ভাবনার সংবাদে স্বভাবতই অনেকে বিমর্ষ।

    ১৯৪৭-এর ১৯ ডিসেম্বর চালু হয়েছিল বসুশ্রী। দর্শকাসন মোট এক হাজার। তার মধ্যে গ্রাউন্ড ফ্লোরে ৭০০টি এবং ব্যালকনিতে ৩০০টি আসন। হলটি চালু হওয়ার দিন উদয়শঙ্করের কল্পনা এবং এমএস শুভলক্ষ্মীর মীরা সিনেমা দেখানো হয়েছিল। ১৯৫৫ সালে এখানেই পথের পাঁচালীর প্রিমিয়ার হয়। অমিতাভ বচ্চনের ‘দো আনজানে’ ছবির শুটিং হয়েছিল বসুশ্রী হলে।

    বসুশ্রীর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সত্যভূষণ বসু, বিনিয়োগ করেছিলেন ইন্দ্রভূষণ বসু আর হিমাংশু বোস ছিলেন ডিরেক্টর। পরবর্তী সময়ে বসুশ্রীর ডিরেক্টর হন নির্মলকুমার বসু। যিনি মন্টু বোস পরিচিত। এক সময়ে তিনি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্মকর্তা ছিলেন। সেই পরিবারের অন্যতম সদস্য সৌরভ বসু ‘এই সময়’-কে বলেন, ‘বসুশ্রী সিনেমা হলের সঙ্গে অনেক ইতিহাস জড়িয়ে। এটা ঠিকই, এখন আর সিনেমা হল চালিয়ে লাভ হয় না। কিন্তু তা বলে বসুশ্রী বিক্রি হয়ে যাক, সেটা আমি চাইছি না। আমাদের পরিবারের কেউ কেউ হলটা বিক্রি করে দিতে চাইছেন। আমি এর ঘোর বিরোধী।’

    কিন্তু বসু পরিবারেরই অন্য এক সদস্যের বক্তব্য, ‘টিকিট বিক্রি করে আর দোকান ভাড়া দিয়ে যা রোজগার হয়, তা দিয়ে খরচ উঠছে না। এখন মাল্টিপ্লেক্সের যুগ। বসুশ্রীকে মাল্টিপ্লেক্সে পরিণত করতে হলে অনেক টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। সেটা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’

    অভিনেতা ও নাট্যকর্মী কৌশিক সেন বলেন, ‘সব ক্ষেত্রে হল মালিকদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। দর্শকরা যদি সেখানে গিয়ে বেসিক কমফর্ট না-পান, তা হলে মুশকিল হল বাঁচিয়ে রাখা। শুধু স্মৃতি আঁকড়ে থেকে কোনও লাভ নেই।’
  • Link to this news (এই সময়)