এই সময়: তাদের হাতে এসে পৌঁছেছে ফরেন্সিক রিপোর্ট। কার্যত তার দিকেই এতদিন চেয়ে বসেছিলেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। আরজি কর কাণ্ডে সেই ফরেন্সিক রিপোর্টই তাঁদের হাতের তুরুপের তাস বলে ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন তদন্তকারীরা।সম্প্রতি মুখবন্ধ খামে আসা সেই রিপোর্ট আদালতের অনুমতি ছাড়া খোলার উপায় নেই। সোমবার শিয়ালদহ আদালতে সিবিআইয়ের তরফে সেই বন্ধ খাম খোলার অনুমতি চাওয়া হয়। বিচারক অভিজিৎ মণ্ডল সেই অনুমতি দিয়েওছেন। তদন্তকারীদের দাবি, ওই ফরেন্সিক রিপোর্ট থেকে উঠে আসতে পারে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ।
আরজি কর কাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব হাতে পাওয়ার পরে গত ১৪ অগস্ট ‘সিন অফ ক্রাইম’ থেকে সিবিআই উদ্ধার করে বেশ কিছু নমুনা। অভিযোগ ওঠে, তার আগেই বেশ কিছু তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সিবিআইয়ের দাবি, তারপরেও ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নমুনা তারা পেয়েছিল এবং সেগুলি পাঠানো হয়েছিল সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে (সিএফএসএল)। ডিএনএ টেস্টের জন্য নিহত তরুণী এবং অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের শরীর থেকেও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।
তরুণীর গালে কামড়ানোর দাগ পাওয়া গিয়েছিল। তা সঞ্জয়েরই কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে ১২ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে তার ‘টিথ ইমপ্রেশন’ নেওয়া হয়েছিল। তদন্তকারীদের দাবি, ওই সমস্ত রিপোর্টের অপেক্ষায় ছিলেন তাঁরা। সেই সবই এখন খামবন্দি হয়ে এসে পৌঁছেছে তাঁদের কাছে।
যদিও সোমবার সওয়াল-জবাবের সময় সিএফএসএল-এর কাছ থেকে কোন কোন রিপোর্ট তারা চেয়েছে, সে বিষয়ে প্রকাশ্য আদালতে জানাতে চায়নি সিবিআই। ১ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার স্ট্যাটাস রিপোর্ট খতিয়ে দেখবে। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত তদন্তে কী কী উঠে এসেছে, ফরেন্সিক রিপোর্টে কী উল্লেখ করা হয়েছে, তা ওই স্ট্যাটাস রিপোর্টে পেশ করবে সিবিআই।
খুন এবং ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয়কে গ্রেপ্তার করেছিল কলকাতা পুলিশ। ওই মামলাতেই ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ এনে টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল এবং আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। এ দিন অভিজিতের পলিগ্রাফ এবং সন্দীপের নার্কো টেস্টের আবেদনের শুনানিতে তাঁদের শিয়ালদহ আদালতে পেশ করার কথা ছিল। কিন্তু, হাজির করা হয়নি তাঁদের।
সিবিআইয়ের কৌসুলি আদালতে বলেন, ‘অন্য একটি মামলার কারণে নার্কো ও পলিগ্রাফ পরীক্ষা করতে এ দিন ফরেন্সিক এক্সপার্ট পৌঁছতে পারেননি। তাই ২৫ সেপ্টেম্বর অভিযুক্তদের হাজির করানোর নির্দেশ দেওয়া হোক।’ ঘটনাচক্রে সন্দীপ-অভিজিতের সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ ওই দিনই শেষ হচ্ছে। পলিগ্রাফ এবং নার্কো পরীক্ষার জন্য সিবিআই আবেদন করলেও, তাতে অভিযুক্তদের সম্মতি রয়েছে কি না, তা ২৫ তারিখ জানতে চাইবে আদালত। তাঁরা অনুমতি না-দিলে ওই পরীক্ষা করা যাবে না।