পুজোর আগেই ট্রামের বিসর্জন! সব লাইন তোলা হবে, ঘোষণা পরিবহণমন্ত্রীর
এই সময় | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
এই সময়: ট্রামে চেপে কলকাতার পুজো-পরিক্রমায় ইতি টানল রাজ্য পরিবহণ দপ্তর। ট্রামে পুজো-পরিক্রমা বন্ধের ঘোষণা করতে গিয়েই সোমবার পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী কার্যত শহরে ট্রামের দেড়শো বছরের ইতিহাসে দাঁড়ি টানার ঘোষণা করে দিলেন। তাঁর বক্তব্য, ‘ট্রামকে স্মারক হিসেবে রাখা হবে। চলবে গড়ের মাঠে ধর্মতলা থেকে ময়দান পর্যন্ত। ওই ট্রাম খিদিরপুর পর্যন্তও নিয়ে যাওয়া হবে না।’উম্পুনের পর থেকেই শহরে ট্রাম-পরিষেবা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মাঝে দু’টি রুটে ট্রাম চালানো হলেও তা ছিল অনিয়মিত। যানজটের আশঙ্কায় পুলিশের আপত্তিতে প্রাচীন পরিবেশবান্ধব গণযান ট্রামের পরিষেবা এক রকম শিকেয় তোলা হয়েছে। মন্ত্রী জানালেন, ভবিষ্যতেও ট্রাম না ফেরানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে রাজ্য সরকার। শহরে ট্রাম চলাচল সংক্রান্ত মামলায় আগামী সপ্তাহে হাইকোর্টে শুনানি রয়েছে। আদালতেও এই সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
দেশে একমাত্র কলকাতাতেই চলত ট্রাম। তা-ও চিরতরে বন্ধ হচ্ছে। মন্ত্রীর মন্তব্য, ‘এসপ্ল্যানেড থেকে ময়দান পর্যন্ত হেরিটেজ হিসেবে একটি সুসজ্জিত ট্রাম থাকবে। যাঁরা কলকাতায় আসবেন তাঁরা চাপবেন। বাকি কোনও রুটে ট্রাম চলবে না। লাইনও তুলে ফেলা হবে। রাস্তা বাড়েনি। যান বেড়েছে। যানজট হচ্ছে। ট্রাম চালানো অসম্ভব। হাইকোর্টে মামলায় কোর্ট জানতে চেয়েছে আমাদের সিদ্ধান্ত। আমরা সিদ্ধান্ত জানাব।’
যেখানে ট্রাম বিদায়ের সিদ্ধান্ত পাকা, সেখানে শহরে পুজোর দিনে এসি-ট্রামে প্রতিমা দেখানোর ব্যবস্থাও তাই তুলে দিল পরিবহণ দপ্তর। গত বছরও সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমীতে এসপ্ল্যানেড-শ্যামবাজার এবং এসপ্ল্যানেড-গড়িয়াহাট রুটে এসি-ট্রামে চেপে প্রতিমা দেখার ব্যবস্থা করেছিল পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগম। কলকাতার নস্ট্যালজিয়া সেই ট্রাম এ বার বাদ পড়ল পরিবহণ নিগমের পুজো-পরিক্রমা থেকে।
বিলাসবহুল ভলভো এবং নন-এসি বাসে পুজো-পরিক্রমার ব্যবস্থা অবশ্য থাকছে। শুরু হবে ষষ্ঠী থেকে। শহরের নামী পুজো, বনেদি বাড়ির পুজো, শহরতলির পুজো, গ্রামবাংলার পুজো দেখানোর ব্যবস্থা থাকছে। মহাষ্টমীতে কামারপুকুর, জয়রামবাটির পুজো দেখানোর প্যাকেজ বানিয়েছে পরিবহণ নিগম। ধান্যকুড়িয়া এবং আড়বলিয়ায় গ্রামবাংলার পুজো দেখাতে নিয়ে যাওয়া হবে।
নিগমের পুজো-পরিক্রমা প্যাকেজে বেরোতে সচিত্র পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতেই হবে। টিকিট বুকিং করতে হবে অনলাইনে। সরকারি বাস এবং ট্রাম টার্মিনাসেও বুকিংয়ের সুযোগ থাকছে। তবে পরিবহণমন্ত্রী জানান, এ বছর গঙ্গাবক্ষে বিসর্জন দেখানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। শহরে পুজো দেখতে এসে রাতে হাওড়া, শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছতে যাতে মানুষের সমস্যা না হয় সে জন্যে সারারাত সরকারি বাস চালানো হবে।