ফিরেছেন অনুব্রত, পুজোর আগে খুলবে চালকল? আশায় বুক বাঁধছেন শ্রমিকরা
প্রতিদিন | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
দেব গোস্বামী, বোলপুর: প্রায় দু’বছর বন্ধ অনুব্রত মণ্ডলের ভোলেবোম চালকল। বন্ধ হয়েছে কর্মীদের বেতনও। দিন গুজরান করতে বাধ্য হয়েই অন্য পেশায় যুক্ত হয়েছেন কর্মচারীরা। তবে অনুব্রত মণ্ডল ও মেয়ে সুকন্যার জামিন মঞ্জুর হওয়ায় খবর মিলতেই আশার আলো দেখতে শুরু করেছিলেন চালকদের শ’দুয়েক কর্মী ও শ্রমিক। সোমবার বোলপুরে ফিরেছেন অনুব্রত। তবে কি পুজোর আগেই খুলবে চালকল? অপেক্ষায় শ্রমিকরা।
ভোলেবোম চালকলের কর্মীদের দাবি, খুলে যাচ্ছে রুজি-রুটির জায়গা। চালকল সচল হলেই রুজি-রোজগার বাড়বে। উৎপাদন শুরু হলেই সব শ্রমিক আবারও কাজ পাবেন। আর তাতেই কর্মী-শ্রমিকদের মধ্যে খুশির হাওয়া বইতে শুরু করেছে। অতীত স্মৃতি তাঁদের চোখে জল এনে দিয়েছিল। অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যেতেই বোলপুরের কালিকাপুরে ভোলে বোম চালকলে শুরু হয় শুধুই নিস্তব্ধতা। ২০১৩ সালের পর সকাল থেকেই দাঁড়িয়ে থাকত লাইন দিয়ে ট্রাক, ডাম্পার। চাতালে ধান শুকাতে ব্যস্ত থাকতেন শ্রমিকরা। চালকল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে শ্রমিকদের। কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয়। রোজগার পুরোপুরি মুখ থুবড়ে পড়ে। অথচ সংসার আছে প্রত্যেকেরই। তা কেমন করে চলবে, এই ভাবনা তাঁদের চোখে জল এনে দিয়েছিল। এবার সেই চোখের জল মুছে দু’বছর পর নতুন উদ্যমে কাজে নামতে চাইছেন শ্রমিকরা। চালকল শ্রমিক ফুলমনি টুডু ও সুকান্ত হাজরা জানান, ‘‘২০২২ সালে ১১ আগস্ট আমাদের কর্তা কেষ্টদা সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পরেই কাজ হারিয়েছি। জামিন মঞ্জুরের খবরেই সকলে আনন্দিত হয়েছি। এখন শুধু অপেক্ষা কবে ফিরবেন অনুব্রত ও মেয়ে সুকন্যা। কবে চালু হবে ভোলে বোম চালকল।’’
উল্লেখ্য, ভোলেবোম চালকলটি অনেকদিন ধরেই চর্চায়। রয়েছে অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের নামে। শিব-ভক্ত অনুব্রতের চালকলগুলিও মহাদেবের নামাঙ্কিত। বোলপুরে অনুব্রতর বাড়ির অদূরেই রয়েছে ওই চালকল। বোলপুরে অনুব্রত মণ্ডলের ভোলেবোম চাল কলটির ২০১১ সালের আগে পর্যন্ত মালিক ছিলেন হারাধন মণ্ডল। তাঁর ছেলেরও অংশীদারিত্ব ছিল। আচমকাই ২০১৩ সালে বিক্রি করে দেন অনুব্রত মণ্ডলকে। আর ওখানে দু’টি চালকল ছিল। দু’টিই কিনে নেন অনুব্রত। তার পর সেটি জোড়া লাগিয়ে প্রায় ৪৫ বিঘা জমির উপরে একটি রাইস মিলে পরিণত করেন। অনুব্রতর প্রয়াত স্ত্রী ছবি মণ্ডল ও কন্যা সুকন্যার নামেই রয়েছে এই চাল কলটি। চালকলের ম্যানেজার সূর্য থাপা জানান, ‘‘দু’বছর আগেও আমার উপরেই চালকলের দেখাশোনার দায়িত্ব ছিল। চালকল হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছিলেন কর্মীরা। তবে চালকলের কর্তা অনুব্রত ও সুকন্যা মণ্ডল বোলপুরে এসেছেন। এবার খুলবে চালকলের গেট। এই আশাতেই বুক বেঁধেছেন কাজ হারানো কর্মী ও শ্রমিকেরা।’’