অভিজাত থেকে নামী বারোয়ারি, পরিবহণ দপ্তরের কোন পুজো প্যাকেজ নেবেন?
এই সময় | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
দোরগোড়ায় বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরেও পুজো পরিক্রমার বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্যের পরিবহণ দপ্তর। সড়কপথ থেকে শুরু করে জলপথ, সব ক্ষেত্রেই থাকছে বিশেষ প্যাকেজের ব্যবস্থা।সাংবাদিক বৈঠক করে পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর মানুষ পুজো দেখতে কলকাতা শহরে আসেন। অনেকে গ্রামের পুজো দেখতেও যান। সবার কথা মাথায় রেখেই আমরা বিভিন্ন প্যাকেজ তৈরি করেছি। মোট ৪৫টি বাস রাখা হয়েছে এই জন্য।’ জলপথে লঞ্চেও পুজো পরিক্রমার ব্যবস্থা থাকছে।
জলপথে পুজো পরিক্রমা
ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতে এই পরিষেবা মিলবে। মিলেনিয়াম পার্ক থেকে লঞ্চ ছাড়বে সকাল ১১:০০ টায়। তারপর হাওড়া জেটি ঘুরে পৌঁছবে আহিরীটোলা ঘাটে। সেখানে অপেক্ষা করবে এসি বাস। সেই বাসের মাধ্যমেই দর্শনার্থীরা পৌঁছে যাবেন বিশিষ্ট পুজো মণ্ডপগুলির প্রাঙ্গণে।যাত্রাপথে থাকছে অহিরীটোলা সংলগ্ন পুজো মণ্ডপগুলি, শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো, কুমোরটুলি পার্ক, জগত মুখার্জি পার্কের পুজো। এছাড়াও থাকছে, বলরাম মন্দির ও শ্রী শ্রী মায়ের বাড়ি। শেষে বাগবাজার সর্বজনীন পুজো মণ্ডপ দেখে দর্শনার্থীদের বাগবাজার সীমার ঘাটে আবার লঞ্চে তুলে দেওয়া হবে। যা হাওড়া জেটি করে মিলেনিয়াম পার্কে শেষ হবে। লঞ্চে ও যাত্রাপথে স্ন্যাকস এবং চা পরিবেশনও করা হবে দর্শনার্থীদের জন্য। ভাড়া থাকছে জনপ্রতি 800 টাকা (পাঁচ বছর ঊর্ধ্বে)।
বনেদি বাড়ির ঠাকুর দেখার সুযোগ
ভলভো এসি বাসে কলকাতার বনেদি বাড়ি ঠাকুর দেখার সুযোগ পাবেন দর্শনার্থীরা। এই পরিষেবা মিলবে ষষ্ঠী সপ্তমী অষ্টমী এবং নবমীতে। যাত্রা শুরু হচ্ছে ইসলামিক ট্রাম টার্মিনাস থেকে সকাল ৮ টায়। যেখানে রিপোর্টিং সময় থাকছে সকাল সাড়ে সাতটায়।যাত্রাপথে পড়বে বদন চন্দ্র রায় বাড়ি, বাগবাজার হালদার বাড়ি, বেলুড় মঠ, শোভাবাজার রাজবাড়ি -১, শোভাবাজার রাজবাড়ি -২, ছাতুবাবু ও লাটুবাবুর বাড়ি, রানি রাসমণির বাড়ি, বেহালা রায় বাড়ি, বেহালা সোনার দুর্গা বাড়ি, সাবর্ণ রায় চৌধুরী বাড়ির আটচালার পুজো, সাবর্ণ রায় চৌধুরীদের মেজ বাড়ির পুজো।ভাড়া থাকছে জনপ্রতি ২০০০ টাকা। ৫ থেকে ১০ বছরে শিশুদের জন্য ১৫০০ টাকা। ০-৫ বছরে শিশুদের ক্ষেত্রে কোনও ভাড়া লাগবে না, সিটও সংরক্ষণ করা যাবে না। দর্শনার্থীদের সকালে জলখাবার দুপুরে লাঞ্চ ও বিকেলের স্ন্যাকস পরিবেশন করা হবে। এছাড়াও চা ও পানীয় জল সরবরাহ করা হবে। প্রত্যেক দর্শনার্থীর সাথে সচিত্র পরিচয় পত্র রাখা আবশ্যিক।
কলকাতায় বাসে পরিক্রমা
হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন সিটিসি টার্মিনাস, টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো, বারাসাত কলোনি মোড়, মধ্যমগ্রাম চৌমাথা, ডানলপ মোড় অর্থাৎ শহরতলির এই সমস্ত টার্মিনাস থেকেও ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমীতে মিলবে পরিষেবা।বাসগুলি নির্ধারিত রুটে শহরের বিখ্যাত বারোয়ারির পুজো গুলি দেখাবে, তারপর যথাযথ স্থানে ফিরে আসবে। হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন সিটিসি টার্মিনাস, টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো থেকে ভাড়া জনপ্রতি ৪৫০ টাকা। বারাসাত কলোনি মোড়, ব্যারাকপুর থেকে ভাড়া জনপ্রতি ৫০০ টাকা। হাবড়া ডিপো থেকে ভাড়া জনপ্রতি ৬০০ টাকা। (পাঁচ বছরের ঊর্ধ্বে ভাড়া)। দর্শনীয় পুজো মণ্ডপগুলি হলো - একডালিয়া, সিংহী পার্ক, বাদামতলা আষাঢ় সংঘ, মুদিয়ালি, শিব মন্দির, কলেজ স্কোয়ার, বাগবাজার সর্বজনীন, বাগবাজার পল্লী।
বিলাসবহুল বাসে পুজো পরিক্রমা
এসপ্ল্যানেড ও বারাসাত থেকে এসি ও আরামদায়ক ভলভো বাসে কলকাতার পুজোগুলি দর্শন করার সুযোগ থাকছে।যে দর্শনীয় পুজোগুলি ঘুরে দেখানো হবে সেগুলি হল - একডালিয়া, সিংহী পার্ক, বাদামতলা আষাঢ় সংঘ, মুদিয়ালি, শিব মন্দির, মহম্মদ আলি পার্ক, কলেজ স্কোয়ার, বাগবাজার সর্বজনীন, বাগবাজার পল্লী।বারাসাত থেকে জনপ্রতি ভাড়া ২১০০ টাকা। এসপ্ল্যানেড থেকে জনপ্রতি ভাড়া ২০০০ টাকা। (পাঁচ বছরের ঊর্ধ্বে ভাড়া লাগবে)। এই বাসে ও স্ন্যাকস,চা, কফি ও লাঞ্চ পরিবেশন করা হবে। এই পরিষেবা মিলবে ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী।ও নবমী। সকাল ন'টায় ছাড়বে বাস এবং যাত্রা শেষে একই জায়গায় ফিরে আসবে।
গ্রামের দুর্গাপুজো দেখার সুযোগ
শহর থেকে দূরে গ্রাম বাংলার পুজো দেখার ও সুযোগ করে দিচ্ছে রাজ্য পরিবহন দপ্তর।।কলকাতা থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরে বসিরহাট সংলগ্ন দুটি গ্রামে বনেদি বাড়ির পুজো দেখার সুযোগ। এসি বাস ছাড়বে সকাল ৮ টায় এসপ্ল্যানেড টার্মিনাস থেকে। রাজারহাটে চিনার পার্কের কাছে এসে পৌঁছাবে ৮ টা বেজে ৩০ মিনিটে।
দর্শনীয় স্থান - গায়েন বাড়ি, সাহু বাড়ি, বল্লভ বাড়ি, রাধাকান্ত মন্দির। ইউরোপীয় স্থাপত্যের আদলে তৈরি এই বাড়িগুলোতে অতীত অতিথিদের সাথে সাবেকি পুজো একাকার হয়ে গিয়েছে। এরপর এখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে আড়বালিয়া গ্রামে। সেখানে বসু পরিবার আর ভট্টাচার্য পরিবারের ঠাকুর দেখানো হবে। এছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি বনেদি বাড়ির ঠাকুর দেখানো হবে।
এই প্যাকেজে জনপ্রতি ভাড়া পড়বে ২০০০ টাকা। সকালের জলখাবার এবং দুপুরের ভোগ দেওয়া হবে। এই পরিষেবা ও মিলবে সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীর দিন। অর্থাৎ ষষ্ঠীর দিন এই পরিষেবা মিলছে না।
বুকিং কী ভাবে করবেন?
রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, বুকিং WBSTC-র সাইটে গিয়ে করা যাবে। এছাড়া যোগাযোগ করা যাবে 8697733391 এবং 87697733392 এই দুই নম্বরে। 9830177000 নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপের যোগাযোগ করেও টিকিট কাটা যাবে। এছাড়াও পরিবহণ নিগমের সমস্ত ডিপো থেকেও প্যাকেজ বুক করতে পারবেন দর্শনার্থীরা।