কলকাতার রাস্তায় খুব সকালে, কিংবা অনেক রাতে ভরসা ছিল ট্রাম। ২০১৫ সালেও শহরের মোট ২৫টি রুটে চলত এই নির্ভরযোগ্য পরিবহণ। হাওড়া ব্রিজ পেরিয়ে একসময় হাওড়া স্টেশনেও যাত্রীদের পৌঁছে দিত ট্রাম। সেই ট্রাম চালানোয় অনীহা শুরু হয়েছিল অনেক আগেই। ফলে একে একে বন্ধ হয়ে যায় কলকাতার জনপ্রিয় কিছু ট্রাম রুট। দাবি, ট্রামের মন্থর গতির জন্য শহরে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
কলকাতার রাস্তায় ট্রাম ফেরানোর দাবিতে হাইকোর্টে একটি মামলা হয়েছে। শহরের রাজপথে ট্রাম চালানোর উপায় খুঁজে বের করতে কলকাতা পুলিশ, পূর্ত দপ্তর, কলকাতা করপোরেশনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি করেছে হাইকোর্ট। তার পরেও এই সিদ্ধান্ত।
ট্রাম না চালানোর পথে যুক্তি দিয়ে পরিবহণ মন্ত্রী সোমবার বলেন, কলকাতার ট্রাম শুধুমাত্র ময়দান ও এসপ্ল্যানেডের মধ্যে চলবে। এসপ্ল্যানেড ও ময়দানের মধ্যে আমরা ট্রাম চালাব শহরের ঐতিহ্য হিসেব। বাকী রুটগুলি বন্ধ করে দেওয়া হবে। কলকাতায় মানুষ ও যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও রাস্তা সেভাবে বাড়েনি। কলকাতার মাত্র ৬ শতাংশ অংশে গাড়ি চলে। এর তুলনায় রাস্তার পরিমাণ দিল্লি ও মুম্বইয়ে অনেক বেশি। এই কারণেই ট্রাম বন্ধ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ঐতিহ্যের পাশাপাশি উপযুক্ত পরিবহণ হিসবে লন্ডন-সহ দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে এখনও চলে ট্রাম ও ডবল ডেকার। আর কলকাতাকে লন্ডন বানাতে গিয়ে তুলে দেওয়া হচ্ছে সেই ট্রাম। ১৮৭৩ সাল থেকে কলকাতায় চলছে ট্রাম। ফলে প্রায় দেড়শো বছরের সেই পথচলা এবার থামছে।