কমিশনের চেয়ারপার্সনের সামনেই নারী সুরক্ষা নিয়ে হয়রানির অভিযোগ আইসি’র
বর্তমান | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের সামনেই নারী সুরক্ষা নিয়ে হয়রানির অভিযোগ তুললেন মহিলা থানার আইসি। মঙ্গলবার জলপাইগুড়িতে পারিবারিক হিংসা ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি নিয়ে সচেতনতা শিবির হয়। সেখানে রাজ্য মহিলা কমিশনের দুই সদস্য সহ হাজির ছিলেন খোদ চেয়ারপার্সন ও পুলিস প্রশাসনের কর্তারা। তাঁদের সামনেই জলপাইগুড়ি মহিলা থানার আইসি ডিকি লামু ভুটিয়া অভিযোগ করেন, নির্যাতিতা মহিলাদের উদ্ধারের পর তাঁদের সুরক্ষা দিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। এনিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আইসি বলেন, গতমাসে আমরা অসমের এক মহিলাকে উদ্ধার করি। তাঁকে ‘ওয়ান স্টপে’ দিতে গেলে সেখান থেকে জানানো হয়, মানসিকভাবে অসুস্থ কাউকে তারা নিতে পারবে না। আইসি’র প্রশ্ন, ওই মহিলা যে মানসিকভাবে অসুস্থ, এটা বোঝা গেল কীভাবে? চিকিৎসকের কোনও সার্টিফিকেট তো ছিল না। তাহলে কি শুধু দেখেই বলে দেওয়া যায়, কোনও মহিলা মানসিকভাবে অসুস্থ? মহিলা থানার আইসি’র আরও অভিযোগ, ওই মহিলাকে মহকুমা শাসকের কোর্টে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে পাল্টা আমাকেই চিঠি দিয়ে জানতে চাওয়া হয়, কোন আইনে আমি সেখানে ওই মহিলাকে পাঠিয়েছি?
জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সুদীপ ভদ্র বলেন, কোনও মহিলা নির্যাতনের শিকার হলে তাঁকে উদ্ধার করে ‘ওয়ান স্টপে’ নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে কাউন্সেলিং, আইনি পরামর্শ, হোমের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়। জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ওয়ান স্টপের পাঁচটি বেড রয়েছে। সেখানে একজন সর্বোচ্চ পাঁচদিন পর্যন্ত থাকতে পারেন। আইসি যে অভিযোগ করছেন, তা কী হয়েছে দেখতে হবে।
আইসি’র অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন। পাশাপাশি জেলা মহিলা সুরক্ষা আধিকারিক সুদীপা সাহাকে আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেন। এদিনের কর্মসূচিতে পঞ্চায়েত প্রধান, আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের পাশাপাশি হাজির ছিলেন মহিলা পুলিসকর্মী, কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। তাঁদের সামনে জেলা মহিলা সুরক্ষা আধিকারিককে পরিচয় করিয়ে দিয়ে মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন জানতে চান, ওই আধিকারিককে তাঁরা সবাই চেনেন? দর্শকাসন থেকে উত্তর আসে ‘চিনি না’। এরপরই চেয়ারপার্সন জেলা মহিলা সুরক্ষা আধিকারিককে বলেন, আপনি কেমন কাজ করছেন? আপনাকে সবাই চেনেন না কেন? যদিও অনুষ্ঠানের পর প্রশ্ন করা হলে জেলা মহিলা সুরক্ষা আধিকারিক বলেন, এনিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।
রাজ্য মহিলা কমিশন এদিন জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল জেলেও যান। সেখানে অনেক বাংলাদেশি মহিলা বন্দির সাজার মেয়াদ শেষ হলেও তাঁরা ফিরতে পারছেন না। বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান কমিশনের চেয়ারপার্সন।