অত্যাধিক তাপমাত্রার প্রভাব উত্তরের চা শিল্পেও, ৩০ শতাংশ কমেছে উৎপাদন
বর্তমান | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: আশ্বিনের শারদ দিবসে ডুয়ার্সের চা বাগানের ভিতরে ৪১ ডিগ্রি তাপমাত্রা স্মরণাতীত কালে কোনওদিন লক্ষ্য করা যায়নি। এমনই পরিস্থিতি এবার দেখা গিয়েছে সেপ্টেম্বরে। আর এতেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে চা মালিকদের কপালে। আবহাওয়ার পরিবর্তন ও গরমের কারণে এবার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের চা উৎপাদনও ব্যাপকভাবে মার খেয়েছে। ডুয়ার্স ও দার্জিলিং এলাকায় এখনও পর্যন্ত ৩০ শতাংশ কম চা উৎপাদন হয়েছে। শুধু তাই নয়, বদলে যাওয়া এই আবহাওয়ার কারণে ডুয়ার্সের একাংশ বাগানের কিছু সেকশনে যে ছত্রাকের আক্রমণ বিগত দিনে খুবই সামান্য ছিল, এবার তা কার্যত বিরাট এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলেও উৎপাদন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জানা গিয়েছে, এবার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চায়ের উৎপাদন ১৪০ মিলিয়ন কেজি কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যা বিরাট আর্থিক ক্ষতি বলেই মনে করা হচ্ছে। এই আবহাওয়াকে সঙ্গী করে এই অঞ্চলে আগামী দিনে চা চাষ ও উৎপাদন নিয়ে রীতিমতো নতুন করে চিন্তা ভাবনা শুরু করেছেন চা বিশেষজ্ঞরা। শুধু চা নয়, এই চরম আবহাওয়া চাষের ক্ষেত্রেও ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। যে পরিমাণ রোদ ও গরম পড়েছে তা আরও কয়েক দিন চললে ধান চাষের ক্ষেত্রেও ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
আইটিপিএ’র ডুয়ার্স ব্রাঞ্চের সম্পাদক রাম অবতার শর্মা বলেন, চা বাগানের ভিতরে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এর আগে কখনও দেখা যায়নি। ডুয়ার্সের চা বাগানগুলিতে এক ধরণের ছত্রাকের আক্রমণ হয়েছে। যা আগে খুবই সামান্য কিছু গাছে হতো। এটাও আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে হয়েছে। এবার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের চায়ের উৎপাদন ১৪০ মিলিয়ন কেজি কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসবই আবহাওয়া পরিবর্তনেরই ফল। কোচবিহার জেলা কৃষিদপ্তরের আধিকারিক অসিতবরণ মণ্ডল বলেন, যে গরম চলছে তা আরও কয়েক দিন চললে ধান চাষের ক্ষেত্রেও ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
সবুজের চাদরে ঢাকা ডুয়ার্সের চা বাগানে আশ্বিন মাসের আবহাওয়া চিরকালই মনোরম ছিল। কিন্তু এবার তা যেন অনেকটাই বদলে গিয়েছে। ব্যাপক গরমে চা বাগানের ভিতরে বসবাসকারী বাসিন্দারাও হাঁসফাঁস করেছেন। গরমের প্রভাব ডুয়ার্সের চা বাগানেও পড়েছে। এর আগে চলতি মরশুমেই ডুয়ার্সে এক টানা প্রায় সাত মাস প্রয়োজন অনুসারে বৃষ্টি না হওয়ায় ব্যাপক সমস্যা দেখা দিয়েছিল। এবার প্লাকিং শেষ হওয়ার এক মাস আগে সেপ্টেম্বরে নতুন করে প্রচণ্ড গরম পড়ায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের চা শিল্প ব্যাপক সমস্যায় পড়েছে। আর এসবের পিছনেই বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।