নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি: দিন দশেকের প্রখর দাবদাহের পর অবশেষে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে নামল স্বস্তির বৃষ্টি। মঙ্গলবার বিকেলের পর জেলায় জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হয়। নাগরাকাটা ব্লকের চম্পাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের হিলা চা বাগানে পাতা তোলার সময় বজ্রাঘাতে গুরুতর আহত হন পাঁচজন মহিলা চা শ্রমিক। অন্যদিকে, বাজ পড়ে ডুয়ার্সের ভুটান সীমান্তের চামুর্চিতে আহত হয় চার স্কুলপড়ুয়া। এদিকে আজ, বুধবার দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে সিকিমের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর। ওই তিন জেলায় জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা। গৌড়বঙ্গের জেলাগুলিতে বজ্রগর্ভ মেঘ থাকবে। বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুর জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বভাস রয়েছে। সবচেয়ে বড় স্বস্তির খবর আগামী শুক্রবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের সমস্ত জেলাতেই বৃষ্টির পূর্বাভাস। কাল, বৃহস্পতিবার দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার জেলায় কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে, শুক্রবার দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহারে রয়েছে হলুদ সঙ্কেত।
সিকিমের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা মঙ্গলবার বলেন, আগামী শুক্রবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টির হলুদ ও কমলা সঙ্কেত জারি করা হয়েছে। বুধবার ও শুক্রবার জেলাগুলিতে থাকবে হলুদ সঙ্কেত। বৃহস্পতিবার কমলা সঙ্কেত। মঙ্গলবারই কয়েকটি জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে। ফলে টানা দাবদাহে উত্তরবঙ্গে যে অসহ্য গরমের দাপট রয়েছে তার হাত থেকে নিস্তার মিলবে। দিনের ও রাতের তাপমাত্রাও অনেকটাই কমবে।
মঙ্গলবার বিকেল থেকেই উত্তরবঙ্গের কিছু এলাকায় হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়। ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ি, কুমারগ্রাম, শিলিগুড়ি সহ অন্যান্য এলাকায় হাল্কা বৃষ্টি হয়। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ শিলিগুড়ি শহর সহ সংলগ্ন এলাকায় মাঝারি মাপের বৃষ্টি হয়। ফলে আবহাওয়ার উষ্ণতার পারদ এক ধাক্কায় অনেকটাই নীচে নেমে যায়। স্বস্তি ফেরে শহরবাসীর। সোমবার জলপাইগুড়ির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৮ ডিগ্রি। বৃষ্টির জেরে মঙ্গলবার তা ৪ ডিগ্রি কমে যায়। এদিন জলপাইগুড়িতে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৬ ডিগ্রি। টানা দাবদাহের জেরে উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলাতেও ক’দিন তাপমাত্রার পারদ ৩৮-৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে ঘোরাফেরা করেছে। পাহাড়েও ক’দিন চালাতে হয়েছে ফ্যান। এদিন পাহাড়েও বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, দখিনা হাওয়ার প্রভাবে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর পরিমাণে জলীয়বাষ্প উত্তরবঙ্গে প্রবেশ করেছে। এরজেরেই আগামী শুক্রবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি সঙ্গে বজ্রপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে।