ঘটনা ধামাচাপা দিতে অভীককে আসরে নাময়েছিলেন সন্দীপ, তথ্য পেল এজেন্সি
বর্তমান | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতা: আর জি করের তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে আসলে কী ঘটেছে, তা প্রকাশ্যে আসা ঠেকাতে মরিয়া চেষ্টা চালান হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। এরজন্য বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছিলেন এসএসকেএমের পিজিটি অভীক দে’কে। এই নির্দেশ পাওয়ার পরই ডাক্তার অভীক ক্লাস রুম ও হোস্টেলে গিয়ে পড়ুয়াদের হুমকি দিয়ে বলে আসেন, সকলেই যেন এটিকে আত্মহত্যা বলে প্রচার করে। ধর্ষণ ও খুন হয়েছেন অভয়া, কেউ প্রচার করলে, তাঁকে শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সন্দীপ ঘনিষ্ঠ ওই চিকিৎসক। হাসপাতালের জুনিয়ার ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য পেয়েছে সিবিআই। এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে অভীকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তাঁকে পাওয়া যায়নি।
খুন ও ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে প্রাক্তন অধ্যক্ষ যে প্রথম থেকেই সক্রিয় ছিলেন, তার প্রমাণ হাতে এসেছে সিবিআইয়ের। তদন্তকারীরা প্রথমে জানার চেষ্টা করেন, সহকারী সুপার ফোন করে তরুণী চিকিৎসক আত্মহত্যা করেছেন বলে কেন জানালেন। ওই পদাধিকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁরা জেনেছেন, তিনি সন্দীপের নির্দেশমতো এই কাজ করেছিলেন। ওইদিন তাঁর সঙ্গে ডিউটি থাকা অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আধিকারিকরা জানতে পারেন, গোটাটাই সন্দীপ ঘোষের মস্তিষ্কপ্রসূত। ভোর ৪.১০ নাগাদ হাসপাতালে নিজের অফিসে বসেই প্রাক্তন অধ্যক্ষ মোবাইলে তরুণীর ছবি পেয়ে গিয়েছিলেন। অভয়াকে খুন ও ধর্ষণ করা হয়েছে তখনই জেনে গিয়েছিলেন। তিনি ডাক্তার অভীক সহ পেটোয়া চার চিকিৎসককে সকাল সাড়ে এগারোটায় ডেকে পাঠান নিজের চেম্বারে। সিবিআই জেনেছে, সন্দীপ তাঁদের বলেন ঘটনা নিয়ে আর জি করের পড়ুয়াদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। কেউ কেউ সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করছেন। আসল ঘটনা কী, সকলেই তা জেনে ফেলেছেন। অন্য মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রীরাও জেনে গিয়েছেন, অভয়ার সঙ্গে কী হয়েছে। তাই যে কোনওভাবে এটা আটকাতে হবে। প্রাক্তন অধ্যক্ষ অভীককে দায়িত্ব দেন তা আটাকানোর। এজেন্সি জেনেছে, এই চিকিৎসক সহ থ্রেড সিন্ডিকেটের সদস্যরা মাঠে নেমে ছাত্রছাত্রীদের হুমকি দিয়ে বলেন, প্রচার করতে হবে অভয়ার আত্মঘাতী হয়েছেন। খুন ও ধর্ষণের শিকার হননি। তা না হলে, তাঁদের ভুগতে হবে পরীক্ষাতেও। সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ কিছু পোস্ট করলে তার মাসুল দিতে হবে পড়ুয়াদের। তাঁদের ভয়ে আর জি করের পড়ুয়ারা মুখ বন্ধ করে ফেলেন। সিবিআই দাবি করেছে, সন্দীপই কলকাতা পুলিসের টিমের সঙ্গে সেমিনার হলে ঢুকিয়ে দেন অভীক দে’কে। এজেন্সির দাবি, আসলে তাঁর লক্ষ্য ছিল সেখান থেকে তথ্যপ্রমাণ লোপাট করা। যদিও টালা থানার প্রাক্তন ওসির দাবি, পুলিস টিমের সঙ্গে বাইরের কেউ ছিলেন না।