• অভিনেত্রী বানানোর টোপ দিয়ে পর্নোগ্রাফি, ৬ জনের ১০ বছর কারাদণ্ড
    বর্তমান | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর ও বারাসত: লকডাউনের সময় অভিনেত্রী বানানোর টোপ দিয়ে গজিয়ে উঠেছিল পর্নোগ্রাফি ফিল্ম তৈরির চক্র। নিউটাউন, বকখালি, দীঘার বিভিন্ন হোটেলে নিয়ে গিয়ে চলত শ্যুটিং। কখনও কখনও মাদক খাইয়ে অচেতনও করা হতো। এই পর্নোগ্রাফি ফিল্ম বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা মুনাফা করত চক্রের সদস্যরা। বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার ওই মামলায় অবশেষে ৬ জন অপরাধীকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বারাসত জেলা আদালত। মঙ্গলবার আদালতের সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়েরা বিচারক প্রজ্ঞা গার্গী ভট্টাচার্য হুসেন এই সাজা ঘোষণা করেছেন। সেই সঙ্গে প্রত্যেককে দেড় লক্ষ টাকা করে জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। অর্থাৎ, ৬ জনকে মোট ৯ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে। এছাড়া, আরও মোট ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে পর্ন ভিডিও সমস্ত ওয়েবসাইট থেকে দ্রুত ডিলিট করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার অফিসারকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডিলিট করে তিনি একমাসের মধ্যে পুলিস কমিশনারের কাছে রিপোর্ট পেশ করবেন।


    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সাজাপ্রাপ্তদের নাম শুভাঞ্জন রায়, প্রকাশ দাস, মিল্টন ঘোষ, উমেশচন্দ্র নাথ, অভিজিৎ বসাক এবং দেবজ্যোতি সরকার। এই মামলার সরকারি পক্ষের বিশেষ আইনজীবী ছিলেন বিভাস চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, লকডাউনে যখন মানুষের হাতে কাজ নেই, সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছিল এই চক্রের সদস্যরা। অভিনেত্রী করার টোপ দিয়ে টালিগঞ্জে অফিস খুলেছিল। সেখান থেকে বিভিন্ন হোটেলে নিয়ে গিয়ে পর্নোগ্রাফি শ্যুটিং করানো হতো। আমরা একজনের বয়ান পেয়েছি, যাঁকে মাছের ঝোলের সঙ্গে দুপুরে মাদক খাওয়ানো হয়েছিল। রাতে তাঁর জ্ঞান ফেরে। তার মধ্যে শ্যুটিং হয়ে যায়। ওই ভিডিও লক্ষ লক্ষ টাকা দামে সাজাপ্রাপ্ত বিক্রি করে। তারপর সেগুলি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে আপলোড করে দেওয়া হয়। চারজন তরুণী বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। ২০২১ সালের মার্চ মাসে অভিযুক্তদের একটি হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তখনও পর্নোগ্রাফির শ্যুটিং চলছিল। তার সরঞ্জামও বাজেয়াপ্ত করা হয়। অভিযোগকারীদের উপরেও অত্যাচার নেমে এসেছিল। প্রথমত, ওয়েবসাইটে আপলোড করে দেওয়ায়, বিভিন্ন মানুষ তাঁদের উত্যক্ত করত। পাড়া ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন তাঁরা। উত্তরবঙ্গের এক তরুণীর বাড়ি ভেঙে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
  • Link to this news (বর্তমান)